মানিকগঞ্জের সিংগাইরে পরকীয়ার জেরে শাশুড়ি তোহরা বেগমকে (৫৫) খুন করার অভিযোগ উঠেছে পুত্রবধূ আয়রিন আক্তারের (১৯) বিরুদ্ধে। আয়রিন আক্তার প্রবাসী রাসেল বিশ্বাসের স্ত্রী। ছুটি শেষে গত সাত দিন আগে তার স্বামী প্রবাসে গিয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ আইরিন আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিংগাইর থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক ২টার দিকে সিংগাইর উপজেলার জামশা ইউনিয়নের মাটিকাটা ছোট বরনডি এলাকার মো. সোনামিয়ার বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত তোহরা বেগম এই গ্রামের মো. সোনামিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, রাতে শ্বশুর ঘুমিয়ে যাওয়ার পর শাশুড়ি ও ছেলের বউ ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে শাশুড়িকে টর্চলাইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন পুত্রবধূ আইরিন। এরপর চিৎকার দিলে মুখ কাপড় দিয়ে চেপে ধরে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন। এতে তার হাত, মুখ, মাথা ও গলায় জখম হয়।
মৃত্যু নিশ্চিত করার পর পুত্রবধূ শাশুড়ির মরদেহ ঘর থেকে টেনে বের করে টয়লেটে নিয়ে আসেন। সেখানে রক্তমাখা কাপড় পরিবর্তন করে লাশ গুম করার উদ্দেশে টেনে ঘরের বাইরে বের করা হয়।
এ সময় শ্বশুরের ঘুম ভেঙে গেলে তিনি ঘটনা টের পান। এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে পুত্রবধূ। মুখে জখম হওয়ার পর জোর করে ছুরি ছিনিয়ে নেন শ্বশুর সোনামিয়া। পরে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে পুত্রবধূকে আটক করে।
সোনামিয়ার ছেলে রাসেল বিশ্বাস প্রবাসী। সে মালয়েশিয়ায় থাকে। ছুটি নিয়ে চার মাস আগে বাড়িতে আসেন। প্রায় তিন মাস ধরে পার্শ্ববর্তী হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলীরচর গ্রামের সিদ্দিক মোল্লার মেয়ে আইরিন আক্তারকে বিয়ে করেন। এই কয়দিনের সংসারে তাদের সঙ্গে প্রায়ই কথাকাটাকাটি হতো। সাত দিন হয়েছে ছুটি শেষে আবার প্রবাসে চলে যায় রাসেল।
আইরিন আক্তার এ বছর এইচ এস সি পাস করেছে। সে যে কলেজে পড়ালেখা করে। সেই কলেজের এক শিক্ষকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে শিক্ষক গতরাতে আইরিনের শ্বশুরবাড়িতে আসলে তার শাশুড়ি দেখে ফেলে। সে কারণেই এই হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
সিংগাইর সার্কেল আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন