অনলাইনে বাইক ক্রয়-বিক্রয় বিডি নামক একটি পেজে চটকদারি বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাকে কৌশলে বাসায় ডেকে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের পর নগদ টাকা ও মোবাইল সেট হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এক নারীসহ প্রতারক চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ বন্দর ফাঁড়ি পুলিশ। ওই সময়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় বারেক ও সাইফ নামে আরও ২ প্রতারক।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী নির্যাতিত যুবক আবু সুফিয়ান সুমন বাদী হয়ে গ্রেপ্তারকৃত ৫ প্রতারকসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে বন্দর খানবাড়ী এলাকা থেকে এদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত প্রতারকরা হলো, মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর থানার সৈয়দপুরস্থ সিকদারকান্দী এলাকার মৃত ফেরদৌস মিয়ার মেয়ে রিমি আক্তার ওরফে নুসরাত জাহান রিমু (২২), বন্দর খানবাড়ি এলাকার মৃত পারভেজ খানের ছেলে আসিফ খান (২৫), ঢাকা কেরানীগঞ্জ থানার আগানগর কাঠুরিয়া এলাকার বড় মসজিদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বাড়ি এলাকার মোশাররফ খানের ছেলে শাকিল (২৩), বন্দর চিতাশাল এলাকার হাকিম মিয়ার ছেলে দিপু (২৯) ও একরামপুরস্থ চক এলাকার মৃত নজরুল কাজীর ছেলে জহির (২৫)।
পলাতক আসামিরা হলো বন্দর থানার একরামপুর এলাকার বারেক (৫০) ও বন্দর খানবাড়ি এলাকার মৃত পারভেজ খানের ছেলে সাইফ (৩০)।
বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায়, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার খাগান এলাকার আব্দুল সাত্তার মিয়ার ছেলে আবু সুফিয়ান সুমন গত ৭-৮ দিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাইক ক্রয়-বিক্রয় বিডি নামক একটি পেজে বাইক বিক্রয়ের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পায়। পরে উল্লেখিত যুবক প্রতারকদের ঠিকানা মোতাবেক এসএমএস করলে ওই সময় বন্দর খানবাড়ি এলাকার মৃত ফেরদৌস মিয়ার মেয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য রিমি আক্তার ওরফে নুসরাত জাহান রিমু এসএমএসটি রিসিভ করে বাইক কেনার জন্য বন্দর খানবাড়ি এলাকায় আসতে বলে।
পরবর্তীতে প্রতারক নারী রিমি আক্তারের কথা মতে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে বন্দর খানবাড়ি এলাকায় আসলে ওই সময় প্রতারক চক্রের সদস্য আসিফ খান ও শাকিল বাইক ক্রেতা আবু সুফিয়ান সুমনকে উল্লেখিত স্থান থেকে রিসিভ করে প্রতারক রিমি আক্তারের ভাড়া করা বাড়ির ৫ম তলা নিয়ে যায়।
পরে সেখানে অবস্থানরত প্রতারক চক্র উল্লেখিত বাইক ক্রেতাকে একটি রুমে আটক রেখে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই সময় অন্যান্য প্রতারক চক্রের সহযোগিতায় প্রতারক রিমি আক্তার ও আসিফ খানের আটককৃত যুবকের ম্যানিব্যাগে থাকা নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১টি বাটন মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়।
পরে প্রতারক চক্র থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগী আবু সুফিয়ান সুমনের পরিচিত ছোট ভাই মেফতাহুস মাদাত এর বিকাশ নাম্বার থেকে ৫ হাজার টাকা পাঠালে প্রতারক চক্রের ব্যবহৃত বিকাশ নম্বরে পাঠানো টাকা ক্যাশ আউট করে নিয়ে যায়।
পরে ওই দিন রাত সোয়া ১১টায় প্রতারক চক্র নগদ টাকা ও মোবাইল সেট হাতিয়ে নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে ভুক্তভোগী যুবক ছাড়া পেয়ে তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বন্দর খান বাড়ি এলাকায় আসলে ওই সময় টহল পুলিশ দেখতে পেয়ে বিষয়টি বন্দর ফাঁড়ি পুলিশকে অবগত করে। পরে পুলিশ থানার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মহিলাসহ ৫ প্রতারককে গ্রেপ্তার করে।
বন্দর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন