কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের উজানিকান্দি গ্রামে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করায় ২০টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে উজানিকান্দি গ্রামে রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর নারী-পুরুষ ও শিশুসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
জোৎস্না বেগম ও সাজিয়া বেগম নামে দুই প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে রাস্তা বন্ধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুরোনো এ রাস্তাটি বন্ধ করায় পরিবারগুলো গত দুই মাস ধরে চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়েছে।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীরা জানান, গত ৩০ বছর ধরে তারা এ রাস্তা ব্যবহার করছেন। জোৎস্না ও সাজিয়া নামে দুই নারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীরের যোগসাজশে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। গত দুই মাস নারী-পুরুষ ও শিশুদের নিয়ে বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়েও এর কোনো সুরাহা হয়নি। আমরা বেড়ার টিন বাঁশ নাকি খুলে ফেলেছি, এ নিয়ে থানায়ও তারা অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে পুলিশ এনেছে। বেড়ার ভেতরে আরও ৬টি পরিবার ছিল তারা বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে উচ্ছেদ করে টিন ও বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছে। এখন তারাও খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাবন করছে।
মানববন্ধনে ফিরোজা বেগম নামে এক বৃদ্ধা নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের গলা চেপে মেরে ফেলতে বলেন। আমরা গত দুই মাস ধরে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। বাড়িতে কতক্ষণ বসে থাকব। এ শেষ বয়সে এসে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে। আমরা আর কিছু চাই না, শুধু বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তাটি খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সরেজমিনে দেখা যায়, চলাচলের জন্য একটি মাটির রাস্তা আড়াআড়িভাবে নতুন টিন ও বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ২০ পরিবারের লোকজনের বাড়ি থেকে বের হওয়ার পুরো রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেছে। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় গত দুই মাস ধরে স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে পারছে না বাড়ির ছাত্রছাত্রীরা। বেকায়দায় পড়ছেন বাড়ির অন্য সদস্যরাও।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগী পরিবারের দুলাল মিয়া, ফয়েজ মিয়া, সোহাগ, শাহ জাহান মিয়া, ধনু মিয়া, ইলিয়াস হোসেন, রাসেল মিয়া, মোকবল মিয়া ও বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জোৎস্না বেগম মোবাইল ফোনে জানান বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি আমরা আমিনের মাধ্যমে মাপ দিয়ে বেড়া দিয়েছি। আমাদের কাছে লিগ্যাল কাগজপত্র আছে।
এ বিষয়ে গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এ ঝামেলা চলছে। আমার কাছে লিখিত একটি বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে তা সমাধান করেছি। রাস্তা বন্ধের বিষয়ে কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা এ বিষয়টিও সমাধান করার চেষ্টা করব। তারা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে এগুলো মিথ্যা।
মন্তব্য করুন