মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় এক কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার কামারগাঁওয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নিরব আহমেদ (১৭) লৌহজং পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী বলে জানা যায়। সে চাঁদপুরের বাসিন্দা মৃত দেলোয়ার হোসেনের পুত্র। স্বামীর মৃত্যুর পর নিরবের মা তার ২ সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি কামারগাঁও চলে আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বুধবার কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান চলছিল। সে সময় বিদ্যালয়ে গেটের বাইরে কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করছিল পাশের মাগডাল গ্রামের বহিরাগত তরুণ আরিফিনসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টিতে প্রতিবাদ করে নিরব, কাজী ওহিদুল ও সাব্বির নামে তিনজন। ওই সময় এ দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। স্থানীয়রা তাদের ঝগড়া থামিয়ে যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
শুক্রবার বিকেলে কামারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শহীদ মিনারে বসেছিল নিরব ও ওহিদুল। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জের ধরে আরেফিন ও শাহীনসহ আরো ১০ থেকে ১২ জন নিরবদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় ওহিদুল পালিয়ে যায়। পরে নিরবকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালে ফেলে পালিয়ে যায় ঘাতকরা। স্থানীয়রা নিরবকে দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আব্দুল্লাহ জানান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ওই তরুণকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই তরুণ মারা গিয়েছিল। ওই তরুণের বুকে ধারালো ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ভাগ্যকুল ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হেসেন বৃহস্পতিবার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, আরেফিনরা কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। গতকালকের জের ধরে আজকে নিরবকে হত্যা করা হয়েছে। ওরা খুবই ভয়ঙ্কর। কয়েক মাস আগে ভাঘরার চরে একটি হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। সে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও আরেফিনরা জড়িত।
শ্রীনগর থানার ওসি আব্দুল্লাহ্-আল-তায়েবীর বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পূর্বশত্রুতা থেকে এ হত্যাকাণ্ডটি হয়ে থাকতে পারে। তবে কী নিয়ে শত্রুতা এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মো. আসলাম খান জানান, ইভটিজিংয়ের ঘটনার প্রতিবাদ করায় প্রতিপক্ষ নিরবকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
মন্তব্য করুন