নওগাঁর সাপাহারে ঘটে যাওয়া আলোচিত ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী আটকের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সিদ্দিকুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে উপজেলার সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে ৫৯জন ভুয়া দাখিল পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এরপর কেন্দ্র সচিব কর্তৃক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর পত্রের আলোকে ওই দিনই কমিটি করে এ তদন্তের আদেশ পাঠানো হয় বলেও অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের দাখিল পরীক্ষায় নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলায় সরফতুল্লাহ ফাযিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে ২০ ফেব্রুয়ারি আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলছিল। এ সময় কেন্দ্র সচিব কর্তৃক ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত করা হয়। যার মধ্যে সাপাহার শিমূলডাঙা দাখিল মাদ্রাসার ১১ জন, মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসার ৩ জন, বলদিয়াঘাট মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ২ জন, পলাশডাঙা দাখিল মাদ্রাসার ৮ জন, দেওপাড়া শিংপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ৩ জন, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসার ১ জন, তুলসিপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ১৪ জন, আন্ধারদীঘি মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ১৭ জনসহ মোট ৮টি মাদ্রাসার ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী শনাক্ত করা হয়।
বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. রিয়াদ চৌধুরীকে আহ্বায়ক, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (পরীক্ষা) মো. আব্দুস সালাম ও উপমাদ্রাসা পরিদর্শক মো. আকরাম হোসেনকে সদস্য করা হয়।
উল্লেখ্য, সাপাহার সরফতুল্লাহ মাদ্রাসা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে এ্যাডমিট কার্ডের ছবির সঙ্গে চেহারার মিল না থাকায় ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। যেখানে ১৫ জন ছাত্র এবং ৪৪ জন ছাত্রী ছিল। পরে আটক সকল শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানোর ঘটনায় ৫৯ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সাথে ওই ৮টি প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে কেন্দ্র সচিব নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন।
ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো মাদ্রাসাগুলো হলো, সাপাহারের সিমুলডাঙা দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), মানিকুড়া দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), বলদিয়াঘাট দাখিল মাদ্রাসা (সদ্য এমপিওভুক্ত), পলাশডাঙা
দাখিল মাদ্রাসা, দেওপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আলাদিপুর দাখিল মাদ্রাসা, তুলসিপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদ্রাসা। এরমধ্যে সদ্য এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা ৩টি এবং ননএমপিওভুক্ত মাদ্রাসা ৫টি।
মন্তব্য করুন