নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণের কোনো টাকা শোধ না করলেও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী আবুল বাশারের ৫৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফ কররে প্রাইম ব্যাংক। এতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছেন আদালত। ১৮ মার্চের মধ্যে এ ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩ মার্চ) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দেন। বিষয়টি আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম কালবেলাকে নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২ মার্চ ৭৩ কোটি ৬৮ লাখ ২২ হাজার ৮১৮ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ খাতুনগঞ্জের জালাল অ্যান্ড সন্স -এর মালিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের খাতুনগঞ্জ শাখা।
এতে বিবাদিরা হলেন, হাজী মোহাম্মদ আবুল বাশার, তার স্ত্রী নাসরিন পারভিন ও ছেলে হাজী মোহাম্মদ নূর উদ্দিন। বার্ষিক ১৬% হার সুদে চিনি, গমসহ ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ের জন্য এ ঋণ দেওয়া হয়। পরে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ৬১২ টাকা সুদ মওকুফ করে দিয়ে ৫৮ কোটি টাকা ঋণ নির্ধারণ করা হয়। ৫৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো টাকা পরিশোধ করেনি আবুল বাশার।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, আবুল বাশার একজন ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি। তাকে ঢালাওভাবে সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান করা ন্যায়সঙ্গত হয়নি। বিপুল পরিমাণ সুদ মওকুফ করা হলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
বিপুল পরিমাণ সুদ মওকুফ করে প্রাইম ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস শেয়ার হোল্ডারদের স্বার্থ পরিপন্থি কাজ করেছে। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা মূল ঋণ আদায়ের আগে সুদ মওকুফ সুবিধা পাওয়ার কারণে যথাসময়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে চরমভাবে উদাসীনতা দেখাচ্ছেন।
তাই আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে আবুল বাশারের ঋণের সুদ মওকুফের ন্যায্যতা বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো সার্কুলারের ব্যত্য়য় ও নালিশী ঋণের টাকা পাচার হয়েছে কিনা তা দুজন যুগ্মপরিচালকের সমন্বয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালককে নির্দেশ দেন বিচারক মুজাহিদুর রহমান।
মন্তব্য করুন