জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জবাবে চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতের অন্তত পাঁচ সেনা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শনিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী জানায়, ‘আমরা সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচজন সহকর্মীকে হারিয়েছি। তাদের আত্মত্যাগ জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
ভারতীয় সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলিতে পাকিস্তানের আনুমানিক ৩৫ থেকে ৪০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছে।
৭ মে ভোরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারত, যার আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি সন্ত্রাসী অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। পরে প্রতিটি পাল্টা প্রতিক্রিয়া এই অভিযানের অংশ হিসেবেই পরিচালিত হয় বলে জানায় নয়াদিল্লি।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসী ঘাঁটি। পরে পাকিস্তান যখন আমাদের অবকাঠামো লক্ষ্য করে আকাশপথে হামলা চালায়, তখন আমরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করি। এতে তাদের পক্ষেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও তা এখনো মূল্যায়নের পর্যায়ে রয়েছে।’
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান চুক্তি ভঙ্গ করে হামলা চালায় বলে দাবি করেছে ভারত। ভারত হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, পাকিস্তান যদি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তাহলে তার ‘কঠোর জবাব’ দেওয়া হবে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজিব ঘাই এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে জানান, যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গের বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাপ্রধানকে ‘হটলাইন’ বার্তার মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হামলার প্রায় দুই সপ্তাহ পরই ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে, যা ছিল কেবল সন্ত্রাসী ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে নয়াদিল্লি।
ভারত আরও জানায়, পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করে তারা ‘প্রত্যাঘাতমূলক জবাব’ দিয়েছে এবং পাকিস্তানের একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে কয়েকটি বিমানঘাঁটি রয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি
মন্তব্য করুন