মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা। এতে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ও বাজারে পানি জমে মানুষের ভোগান্তি যেন চরম আকার ধারণ করেছে। বৃষ্টির দিন আসতে না আসতেই এলাকার এ অবস্থায় শঙ্কিত এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জনতার মোড় এলাকায় মির্জাবাড়ীর সামনে বৃষ্টিতে সড়কটিতে হাঁটুপানি জমে আছে। এ অবস্থাতেই চালাচল করছে বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অসংখ্য যানবাহন। ভোগান্তিতে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
এ ছাড়াও ঘিওর পঞ্চরাস্তা মোড় হতে কলেজ রোড, ঘিওর বাজার টু বড়টিয়া সড়কের বেপারীপাড়া এলাকায় সড়কে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে ময়লা-আবর্জনা ছোট-বড় ও মাঝারি গর্ত ভরে উঠেছে। আর যানবাহনগুলো এসব গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ কারণে খানাখন্দ ও কর্দমাক্ত ওই সড়কে মানুষ ও যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কের এমন বেহাল দশা থাকলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ অভিযোগ স্থানীয়দের।
অন্যদিকে পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় একদিনের বৃষ্টিতেই ঘিওর বাজারের অলিগলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েছেন। ময়লা পানির ভ্যাপসা গন্ধে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শফিক জানান, কোনো রকম একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক তলিয়ে যায়। গতকাল রাতে ঘিওর থেকে বাড়ি যাওয়া পথে জনতার মোড় সড়কে গাড়িটি উল্টে যায়। কোনোমতে বেঁচে গেছি। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি জানান, গত দুই বছর আগে প্রায় নয় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ঘিওর বেপারীপাড়া এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য নামমাত্র সরু একটি ড্রেন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, এসব ড্রেনে ঢাকনা নেই। রাস্তার পাশে হওয়ায় ড্রেনগুলো বিপজ্জনক। মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। অন্ধকারে অনেকেই ড্রেনের অবস্থান বুঝতে না পেরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া খোলা ড্রেনে জমে থাকা পানিতে মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। নামমাত্র এ ড্রেন জনগণের কোনো কাজেই আসেনি।
ঘিওর সদর ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম টুটুল জানান, ঘিওর বাজারের আশপাশে কয়েকটি সড়কে সামান্য বৃষ্টিতেই জলবদ্ধতা সৃষ্টির ফলে জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তবে ঘিওর বাজারের জলবদ্ধতা নিরসনে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পের ট্রেন্ডার হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, সংস্কার উপযোগী সড়কগুলো আগামী ২৪-২৫ অর্থবছরে পল্লী সড়ক ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওয়তায় মেরামত করা হবে। এ ছাড়া ঘিওর বাজারের জলাবদ্ধতা নিরসনে নন মিউনিসিপ্যাল প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন