তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি চেষ্টা করবে গন্ডগোল লাগানোর জন্য, সেই সুযোগ আমরা তাদের দিব না। তবে কেউ রক্তচক্ষু দেখালে আওয়ামী লীগ জানে কী করতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেব কয়দিন পরপর চট্টগ্রামে আসছেন, এখানে এসে লাভ নাই। যদি বাড়াবাড়ি করেন আপনাদের আন্দোলন বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) চট্টগ্রাম পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে আওয়ামী লীগ ঘোষিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রাপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা’র আয়োজন করে।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর কালিমা লেপনের উদ্দেশ্যে একজন প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা করা হয়েছে। তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেটি নিয়েও অনেকের কত মাতামাতি। যারা করেছে তারা দুষ্কৃতকারী। তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এটি করেছে। এটির আমরা নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, বিএনপি দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করার উদ্দেশ্যে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মানসে সারা দেশে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার পর বিএনপি অনেক উদ্বেলিত হয়েছিল। এখন দেখি বিএনপি ভালো হয়ে গেছে, তাদের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। তারা পুলিশের ওপর আগের মতো হামলা পরিচালনা করার সাহস পাচ্ছে না। বিএনপির আশা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কিছু বলবে। কিন্তু এ নিয়ে তারা টুঁ শব্দ করেনি। এজন্য তারা (বিএনপি) প্রচণ্ড হতাশ হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গত সোমবার চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশ করেছেন। তিনি সেখানে কথা ঘুরিয়ে দিয়ে বলেছেন আমরা বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করি না। অথচ বিএনপি দিনের বেলায় তারুণ্যের সমাবেশ, হাঁটা কর্মসূচি, বসা কর্মসূচি, মাঝেমধ্যে দৌড় কর্মসূচি দেয়, আবার রাতবিরাতে রুমিন ফারহানা, শ্যামা ওবায়েদ, নিপুণ রায়সহ তাদের মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দূতাবাসে ধরনা দেয়, উনাদের পায়ে ধরেন। এখন তারা বুঝতে পেরেছেন ধরনা দিয়ে কোনো লাভ হয় নাই। মার্কিন প্রতিনিধি দল এসেও তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু বলেনি। তারা বুঝতে পেরেছে তাদের এই তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি বিদেশিরাও প্রত্যাখ্যান করেছে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কদিন আগে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। পরশুদিন খুলনা শহরেও তারুণ্যের সমাবেশ করেছে। আমি দেখলাম সেখানে সব ষাটোর্ধ মানুষ, সবাই ৫০ ও ৬০ বছর বয়সের তরুণ। মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যদি তারুণ্যের ডেফিনেশনটা কী একটু বলতেন, তাহলে ভালো হতো।
বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আজকেও তারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি করা। আওয়ামী লীগ গণমানুষ থেকে গড়ে উঠা রাজপথের দল, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব প্রতিকূলতার মধ্যে উজান ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার দল। আমরা রাজপথে আছি, নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে থাকব, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে টানা পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে তারপর আমরা ঘরে ফিরে যাব।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের দলেরও বৈঠক হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবেও বৈঠক হয়েছে। তারা স্পষ্টত বলেছে যে, আমরা বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন-কানুন মেনেই যাতে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হয় সেটিই আমরা চাই। তারা তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার এসব কোনোকিছুর কথা বলে নাই। আমাদের দেশ চলবে আমাদের সংবিধান ও আমাদের আইন অনুযায়ী। কারো প্রেসক্রিপশনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ চলবে না, এটা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। যার ধমনিতে শিরায় বঙ্গবন্ধুর রক্ত স্রোত প্রবাহমান।
শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন