পিরোজপুর নেছারাবাদের গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়ে মোবাইল ছিনতাই করেছে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমানের সমর্থকরা।
এ ব্যাপারে নেছারাবাদ থানায় মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) একটি এজাহারের আবেদন করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন (৫১)। তিনি দৈনিক আজকের বিনোদন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
তিনি নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার বাড়ি ফিরেছেন। এখনও তিনি তার ছিনতাই যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে পারেননি। নেছারাবাদ থানা সূত্রে জানা গেছে, মোবাইলটি সংরক্ষিত আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৭ জুলাই বিকেল ছয়টার দিকে ফলাফল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মী ডালিম মিয়া ও রাহাত ফকিরের পাটিকেলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির সামনের স্টেশনারি দোকান ভাঙচুর করেন মিজানুর রহমানের লোকজন। এ সময় ভাঙচুরের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করায় সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুনের ওপর এই হামলা করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালনের পরে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমানের সমর্থকরা দোকান ভাঙচুর করছে দেখে পেশাদারিত্বের অংশ হিসেবে ভিডিও করছিলাম। হঠাৎ আমাকে কিল-ঘুসি দিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। বলেছে ভিডিও ডিলিট কর নতুবা মোবাইল দেব না।
আরও পড়ুন : ভোটে জিতেই পরাজিত প্রার্থীর বাড়িতে ‘লুটপাটের’ অভিযোগ
ভাঙচুর করা দোকানের মালিক রাহাত ফকির বলেন, ভোটগ্রহণের শেষে শতাধিক লোক হঠাৎ আমার ওপর চড়াও হয়ে আমাকে মারধর এবং দোকান ভাঙচুর করে। মারার কারণ জানতে চাইলে আমাকে বলে তুই হচ্ছে, নৌকা মার্কার দালাল।
প্রত্যক্ষদর্শী দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি দেবাশীষ মণ্ডল বলেন, আমি এবং মামুন ভাই একইসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলাম। ভিডিও ধারণ করায় হামলাকারীরা তার মোবাইল নিয়ে গেছে। আমি চেয়ারম্যানকে একাধিকবার ফোন করেছি ফোন রিসিভ করেননি। মোবাইল উদ্ধারের জন্য নেছারাবাদ থানার ওসি এবং রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফোন করেও কোনো লাভ হয়নি। আমার মোবাইল থেকে ধারণ করা ভাঙচুরের ভিডিও এবং ছবি তাদের পাঠিয়েছিলাম।
নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার শাহীন শরীফ বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা মারাত্মক একটি অপরাধ। সহিংসতার ভিডিও আমি পেয়েছি। মোবাইল ছিনতাইয়ের ব্যাপারে আমি গাজী মিজানুর রহমানের সঙ্গে আলাপ করছি।
এই ব্যাপারে গাজী মিজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এই ব্যাপারে নেছারাবাদ থানার ওসি জাফর আহমেদ বলেন, গতকাল রাতে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আজ এজাহারের জন্য আরও একটি আবেদন পেয়েছি। তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন