দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক দুই ভাইস-চেয়ারম্যানসহ ৬ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
গত ২১ মে সারাদেশের ন্যায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ৬৭টি ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলে। এদিন ৫৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনে দেওয়া মোট ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীকে পেতে হবে, তা না হলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে।
দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুইজন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশেরও কম ভোট পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতির ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদ মিঠু ১৫ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় জামানত হারিয়েছেন। এ পদে ভোটারদের দেওয়া মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৩টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৭৩১টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার মখদুম মাসুম মাশরাফি যুক্তি মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৩০টি ভোট এবং রাজু আহম্মেদ মিঠু ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ২৬টি ভোট।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১১ হাজার ৫৪৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৮ হাজার ৪৮৪টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৩ হাজার ৫৯টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।
এদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পরিমল দে সরকার, উপজেলা কৃষক দলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক ও পামূলী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি আব্দুর রহিম ও নজরুল ইসলাম জামানত হারিয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৯৩৪টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৬৪০টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পরিমল দে সরকার টিয়া পাখি প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৫৮টি ভোট, আব্দুর রহিম চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ৪৮২টি ভোট এবং নজরুল ইসলাম উড়োজাহাজ প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ২৪৬টি ভোট।
উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৩৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৭৭১টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৪ হাজার ১৬৩টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এ ছাড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুন নাহার লাকী জামানত হারিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের প্রদত্ত মোট ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৫টি ভোটের মধ্যে ১৫ শতাংশ হারে এই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৬ হাজার ৬৪১টি ভোট পেতে হতো। কিন্তু লুৎফুন নাহার লাকী ফুটবল প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৫৩৩টি ভোট।
উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এ পদে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪৫ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বৈধ ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজার ৮৫৫ টি এবং বাতিলকৃত ভোট ৪ হাজার ৯০ টি ভোট। প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৫ দশমিক ৭৫।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনে প্রদত্ত মোট ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীকে পেতে হবে। তবে ১৫ শতাংশের কম ভোট পাওয়া প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত বলে গণ্য হবে।
মন্তব্য করুন