নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪, ০১:৩৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নাটোরের ছাতনী গণহত্যা দিবস আজ

সদর উপজেলার ছাতনী গণকবর প্রাঙ্গণে ছাতনী গণহত্যা দিবস পালিত। ছবি : কালবেলা
সদর উপজেলার ছাতনী গণকবর প্রাঙ্গণে ছাতনী গণহত্যা দিবস পালিত। ছবি : কালবেলা

নাটোর ছাতনী গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। এই দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জুন) সকালে সদর উপজেলার ছাতনী গণকবর প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ছাতনী গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শহীদ পরিবারের আয়োজনে এবং শহীদ পরিবারের সদস্য দুলাল সরকারের সভাপতিত্বে সকালে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আখতার জাহান সাথী, ডেপুটি কমান্ডার মকছেদ আলী মোল্লা প্রমুখ। আলোচনা শেষে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।

১৯৭১ সালে ৪ জুন রাতে কুখ্যাত রাজাকার হাফেজ আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহিনীসহ কয়েকশ বিহারী নাটোর সদরের ছাতনী গ্রামসহ আশপাশের ১০টি গ্রামে প্রবেশ করে শতাধিক ঘুমন্ত বাঙালিকে ধরে ছাতনী স্লুইচ গেটে এনে একত্রিত করে গুলিসহ ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে ও জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল। সেসময় তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে মুখে অ্যাসিড দিয়ে ঝলসানো হয়। পরে এসব শহীদদের মরদেহ ছাতনী স্লুইচ গেটসহ আশপাশের পুকুর ও ডোবায় মাটিচাপা দেওয়া হয়।

১৯৭১ সালের নাটোরের ছাতনী গ্রামের গণহত্যার সেই নৃশংস ও হৃদয় বিদারক কথা আজও এলাকার মানুষের মনে নাড়া দেয়।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা তৎকালীন এমসিএ শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর বাড়ি ছাতনী গ্রামে হওয়ায় এই জনপদের অধিকাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। এ কারণে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা অবাঙালিদের আক্রোশে পড়ে এই গ্রাম। কিন্তু এই গণহত্যার কোনো সরকারি নথিভূক্ত করা হয়নি বলে অনেকেই আক্ষেপ করেন।

শহীদ মনিরুজ্জামান সরকারের সন্তান দুলাল সরকার জানান, শুধুমাত্র শহিদ পরিবারের সদস্যদের আয়োজনে এই দিবসটি পালন করা হয়। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পার হয়ে গেলেও এখনো শহীদ পরিবার অপেক্ষায় আছেন তাদের মর্যাদার জন্য।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম নান্টু জানান, এখনো পর্যন্ত দোষীদের বিচার না হওয়ায় আমরা হতবাক। মুক্তিযুদ্ধের সরকার ক্ষমতায় থাকতে এখনো পর্যন্ত তাদের চিহ্নিত করা হয়নি এবং তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। শহীদদের পরিবারের সন্তানরা এই কারণেই হীনমন্যতায় ভোগেন।

নাটোর সদর উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা নকসেদ আলী মোল্লা জানান এই দিবস উপলক্ষে দায়িত্ব শুধু শহিদ পরিবারের নয় এটি রাষ্ট্রকেও নিতে হবে। সেই সাথে যথাযোগ্য মর্যাদায় এই দিবসটি পালন করতে হবে।

তিনি আরো জানান, যে সকল রাজাকার বিহারী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচার হয়নি। যে কারণে আমরা মনে করি নাটোর এখনো কলঙ্কিত হয়ে আছে। আমরা দাবি জানাই-দ্রুততার সাথে ওই সকল রাজাকার এবং তাদের দোসরদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন ‘বাবরি মসজিদের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শনিবার

নতুন প্রজন্ম শান্তিপূর্ণ রাজনীতি প্রত্যাশা করে : ইশরাক

ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা আজ

‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের আপনজন’

২০ বছরের ব্যবসা বাঁচাতে ছাড়লেন চেয়ারম্যান পদ

তাসনিম অনন্যার অনুসন্ধানে মহাবিশ্বের চাঞ্চল্যকর রহস্য উন্মোচন

২০২৬ বিশ্বকাপে কবে মুখোমুখি হতে পারে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল?

বিশ্বকাপের গ্রুপ অব ডেথে ফ্রান্স

নুরুদ্দিন অপুর হাত ধরে আ.লীগ নেতার বিএনপিতে যোগদান

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

১০

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

১১

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

১২

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

১৩

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

১৪

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

১৫

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

১৬

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

১৭

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

১৮

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১৯

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

২০
X