মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ভারতীয় অবৈধ চিনির ব্যবসা করে আসছে। প্রতিদিন জুড়ী উপজেলার কামিনীগঞ্জ ও ভবানীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ী, মিষ্টির দোকান ও বেকারিতে ঢুকছে এসব অবৈধ চিনি। এসব অবৈধ চিনি নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে চোরাকারবারিদের রোষানলে পড়েন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
জানা যায়, সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় চিনির চালান দেশে প্রবেশ করানো, বর্তমানে দেশে অনেকটা ওপেন সিক্রেট। সীমান্তে শিথিলতার সুযোগে বাংলাদেশের বাজার ভারতীয় চিনিতে সয়লাব। একটি চোরাকারবারি চক্র ভারতীয় অবৈধ চিনি এনে প্রতিষ্ঠিত শিল্প গ্রুপগুলোর বস্তাতে ভরে বাজারে চিনি বিক্রি করে রমরমা ব্যবসা করে আসছে।
কয়েকদিন আগে সাংবাদিকদের দেওয়া তথ্য মতে, জুড়ী উপজেলার এক দোকানে পিকআপবোঝাই চিনি নামানোর সময় ভারতীয় চিনিসহ একটি গাড়ি আটক করে থানায় পুলিশ। পরে এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে চালকসহ দোকান মালিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে চোরাকারবারিরা স্থানীয় সাংবাদিকদের ঘায়েল করতে বিভিন্ন ফন্দি আঁটে।
মঙ্গলবার (১২ জুন) রাতে স্থানীয় সাংবাদিক হারিছ মোহাম্মদ ওষুধ আনতে পোস্ট অফিস রোডে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় চোরাকারবারি পিকআপ দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। গাড়িচাপা থেকে বাঁচতে তাৎক্ষণিক সাংবাদিক হারিছ মোহাম্মদ সড়কের পাশে মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে মারাত্মক আহত হন।
এ সময় চিনির গাড়িতে ড্রাইভারের পাশে বসা অবৈধ ভারতীয় চিনির সিন্ডিকেটের মূলহোতা বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের বদর উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) সাংবাদিক হারিছ মোহাম্মদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গাড়ি নিয়ে দ্রুত চলে যান। পরে স্থানীয়রা সাংবাদিক হারিছ মোহাম্মদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
বড়লেখার স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নারী নির্যাতনসহ চোরাচালানের কয়েক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। তারপরও সে বীরদর্পে চোরাচালান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জাহাঙ্গীর এসব করছে-এ নিয়ে এলাকায় ঘুরপাক খাচ্ছে নানামুখী প্রশ্ন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বড়লেখা উপজেলার একাধিক জনপ্রতিনিধি জানান, জাহাঙ্গীর একজন চিহ্নিত চোরাকারবারি। তারপরও সে কীভাবে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে জুড়ী থানায় হারিছ মোহাম্মদ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
জুড়ী থানার ওসি এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন