খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কোরবানির আগে টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারশালা

লোহা দিয়ে নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন কারিগর। ছবি : কালবেলা
লোহা দিয়ে নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন কারিগর। ছবি : কালবেলা

লোহা পেটানোর ‘টুংটাং’ শব্দে মুখর এখন উপজেলার কামার পাড়াগুলো। কোরবানিকে কেন্দ্র করে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লোহা পিটিয়ে কামাররা তৈরি করছেন দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি। এসব জিনিস দুই ধরনের লোহার উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়। একটি স্প্রিং লোহা (পাকা লোহা) এবং আরেকটি কাঁচা লোহা। লোহা ও কয়লার দাম গত বছরের চেয়ে এবার বেড়েছে। তাই গত বছরের চেয়ে এসব জিনিসের দামও বেশি।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতি তৈরিতে দম ফেলার ফুরসত নেই কামারদের। দেশীয় জাতের লোহার এসব জিনিসপত্র তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার স্থানীয় কামারেরা।

কোরবানি ঈদে গরু, ছাগল, মহিষ কোরবানির পশু হিসেবে জবাই করা হয়। ঈদের দিন সকাল থেকে কোরবানির পশু জবাই চলে। এসব পশুর গোশত কাটতে দা-বঁটি, ছুরি, ধামা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য। কোরবানির পশু কাটা-কাটিতে চাই এসব ধারালো অস্ত্র।

শুক্রবার (১৪ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, খানসামা বাজার, উপজেলার পাকেরহাট বাজার, কাচিনীয়া বাজার, বোটের হাট, চৌরঙ্গী বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের হাট বাজারে।

এবার প্রতিটি ধারালো দা বিক্রয় হচ্ছে ৩০০-৫০০ টাকা, কোরবানির ছুরি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, পশুর হাড় কাটার জন্য চাপাতি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, চামড়া ছাড়ানোর চাকু ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, নারিকেল কোরানি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, মাংস কাটার বটি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তাছাড়া অন্যান্য কৃষি উপকরণ ধানকাটার কাঁচি, লাঙ্গলের ফলাসহ অন্যান্য তৈজসপত্রও ভালো দামে বিক্রয় হয়ে থাকে।

উপজেলার কয়েকজন কর্মকার কালবেলাকে জানান, বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কোরবানির ঈদে তাদের আয় রোজগার অনেক বেশি হয়। এমনিতে সারা বছর কাজ অনেক কম থাকে। এর মধ্যে কয়দিন পর পর লোহার দাম বেড়ে যায়। এতেই তারা বেকায়দায় পড়েন। ভালো চালান থাকলে আগে থেকে লোহা কিনে রাখতে পারলে ভালো লাভ পাওয়া যেত বলেও জানান তারা।

তাছাড়া পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস তৈরির কাজে প্রয়োজনীয় ওইসব হাতিয়ারের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। তাই ঈদের পূর্বেই কোরবানির পশু জবাই কাজের হাতিয়ার সংগ্রহে কামারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেন স্থানীয় কসাই, কৃষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ।

উপজেলার হোসেনপুর কামারপাড়ার কর্মকার মানিক কালবেলাকে বলেন, এখন কিছু আয় হলেও সারাবছর আমাদের টুকটাক করে চলতে হয়। আমি আগে ডাঙ্গারহাটে তৈরি করতাম এবং সেখানেই বিক্রি করতাম হাট ভেঙে যাওয়ায় এখন বাড়িতে তৈরি করে বিক্রি করি।

উপজেলার পাকেরহাট এলাকার কামার দয়াল চন্দ্র রায় কালবেলাকে বলেন, পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই পেশায় আছি। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে তাই আগের মতো আর লাভ নেই। পরিবার নিয়ে কোনোরকম দিন পার করছি।

স্থানীয় ক্রেতারা কালবেলাকে জানান, আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে এবং মাংস কাটতে দা, বঁটি, চাকু ও ছুরির প্রয়োজন। এজন্য বাজারে দা, বঁটি ও ছুরি কিনতে এসেছি। তবে গত বছরে এসব জিনিসের দাম খানিকটা বেশি।

চাপাতি কিনতে আসা আব্দুর সুবাহান কালবেলাকে বলেন, আগের চাপাতিটা আর চলে না। তাই দাম দর করে একটি চাপাতি নিয়েছি ৪০০ টাকায়। মাংস ও হাড় কাটার জন্য এটা কিনেছি।

খানসামা বাজারে কোরবানির যন্ত্রপাতি কিনতে আসা আ. সালাম কালবেলাকে বলেন, বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এই সময়ে অনেক ভিড় থাকে। বাজারে অনেক দোকান থাকায় এখানে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে কাজ করা যায়। তবে লোহার দাম বাড়ায় এসব যন্ত্রপাতির দামও বেড়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কক্সবাজারে মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানি, অতঃপর...

এসএসসি পাসেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরির সুযোগ

গয়েশ্বর চন্দ্রের দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ধার্য

সংস্কার না করে পূর্বের নিয়মে নির্বাচন হতে পারে না : চরমোনাই পীর

ওমরাহ করে ফিরেছেন রইস উদ্দিন, সাক্ষাৎ করতে গেলেন অপু বিশ্বাস

কেউ টাকা ধার চাইলে সম্পর্ক ঠিক রেখে যেভাবে ‘না’ বলবেন

ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা লড়াই করেছি : মো. শাহজাহান

৫৫ লাখ টাকা চুরির মামলায় গৃহকর্মী-দারোয়ান রিমান্ডে 

স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যবহারকারী স্বামীকে নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে

এশিয়া কাপ হকির ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ

১০

গলায় ম্যাজিক বল আটকে শিশুর মৃত্যু

১১

সন্তান-স্ত্রীসহ সাবেক এমপি সালাহ উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা 

১২

প্রতিদিন কতটা হাঁটা স্বাস্থ্যসম্মত, ৭০০০ নাকি ১০০০০ পা?

১৩

জুলাই সনদের কয়েকটি দফা নিয়ে বিএনপির আপত্তি আছে : সালাহউদ্দিন

১৪

রাতে ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

১৫

অল্পের জন্য রক্ষা পেল ট্রেনের হাজারো যাত্রী

১৬

এআই ভিডিও দিয়ে অপপ্রচার, দাবি বিএফআইইউর প্রধানের

১৭

মেহেরপুর সীমান্তে ৩৯ নারী-পুরুষকে হস্তান্তর বিএসএফের

১৮

সেই রইস উদ্দিনের বাড়িতে অপু বিশ্বাস

১৯

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের পদত্যাগ

২০
X