সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার সিএমএম কোর্টে নেওয়া হয় আনিসুল ও সালমানকে। এ সময় তাদের বহনকারী ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছলে সেখানে উপস্থিত সাধারণ জনতা তাদের উদ্দেশে ডিম নিক্ষেপ করেন।
এর আগে রাজধানীর সাইন্সল্যাবে হকার মৃত্যুর ঘটনায় তাদের দুজনকে আসামি করা হয়। হকার শাহজাহান হত্যায় তার মা বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন। এই মামলায় দুজনকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে নিউমার্কেট থানা সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবিতে রাখা হয়েছিল। ডিবি কার্যালয় থেকে তাদের আদালতে উপস্থাপন করে ১০ দিন রিমান্ড চাইবে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মামুনুর রশীদের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য আসে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্যান্য মন্ত্রী-এমপির মতো এই দুজনও আত্মগোপনে চলে যান। এর মধ্যে সালমান এফ রহমানের বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার খবরও বের হয়। গতকাল পুলিশ তাকেসহ আনিসুল হককে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মাইনুল হাসান কালবেলাকে জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নৌপথে পলায়নরত অবস্থায় রাজধানী ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় দায়ের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। একজন ছাত্র ও একজন হকার। পরের দিন ওই ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। এসব হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে এ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, এই মামলাগুলোতে আসামিদের নাম অজ্ঞাত হিসেবে ছিল। ‘তদন্তে’ নিশ্চিত হয়ে শেখ হাসিনা সরকারের ওই দুই প্রভাবশালীকে ইন্ধনদাতা হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যান। পাশাপাশি দলটির নেতারাও আছেন আত্মগোপনে। কেউ কেউ দেশ ছেড়েছেন বলে খবর এসেছে।