কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিচারব্যবস্থা সরকারের অশুভ পদক্ষেপের সবচেয়ে বড় শিকার : জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

‘পুলিশ এতদিন গায়েবি মামলা করতো। এখন দুঃখজনকভাবে নিম্ন আদালতের কিছু কিছু কোর্ট মনে হচ্ছে গায়েবী রায় দিচ্ছে।’

আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তোলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপি’র আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বর্তমান অনির্বাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকে একের পর এক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। সরকারের অশুভ পদক্ষেপের সবচেয়ে বড় শিকার বিচার ব্যবস্থা। বিশেষ করে নিম্ন আদালতসমূহ। এই সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে বেছে বেছে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দকে একের পর এক আদালত কর্তৃক সাজা প্রদান করা হচ্ছে। এটি শুধুমাত্র বিচারের নামে অবিচার বা প্রহসনই নয়, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনও বটে।’

‘মিথ্যা ও সাজানো রাজনৈতিক মামলায় বিএনপির মৃত ও গুম হওয়া নেতাসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক উদ্দেশ্যমূলক রায় ও সাজা প্রদান’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা মামলায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাজা প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকদের বিচারিক ক্ষমতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে এসব রায় বাতিলের দাবি জানান তারা।

লিখিত বক্তব্যে কায়সার কামাল আরও বলেন, ‘২০ নভেম্বর ঢাকার দুটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চারটি মামলায় ৪ বছর আগে মারা যাওয়া বিএনপি নেতা আবু তাহের দাইয়া, ১০ বছর আগে গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমন এবং ৮ বছর আগে গুম হওয়া আমিনুল ইসলাম জাকির, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব জনাব হাবিব উন-নবী খান সোহেল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলীসহ ৫৪ নেতাকর্মীকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২ মাসে ঢাকার আদালতে ২১ মামলায় বিএনপির ২৭১ জনক কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর গত ১ বছরে ২৯ মামলায় ৩০৪ জনকে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই।’

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এই মহাসচিব বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণ করতে হয় সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা। অধিকাংশ মামলায় সাক্ষী হিসেবে শুধু পুলিশ সদস্যকে হাজির করিয়ে সাজা প্রদান করা হয়েছে। কোনো নিরপেক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি ফৌজদারি কার্যবিধিতে বর্ণিত বিচারিক স্তরসমূহও অনুসরণ করা হয়নি। বিএনপি নেতাদের একের পর এক সাজা প্রদানের মাধ্যমে বিচারিক আদালতের প্রতি সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপের যে অভিযোগ আমরা বারংবার করে আসছিলাম তাই প্রমাণ হলো।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিচারের নামে বিরোধী দল নিধনের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে এ রায়গুলো ইতিহাসে স্থান করে নিল। আমাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার চরম বহিঃপ্রকাশ এ রায়গুলো। আইনজীবী হিসেবে আমরা লজ্জাবোধ করছি। এ রায়গুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে যে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল তার সত্যতা প্রমাণিত হলো। যে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার জন্য দীর্ঘদিন আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে এসেছি, তারাই আজ এ অনির্বাচিত সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের একের পর এক সাজা প্রদান করছেন। জাতির জন্য এ এক অশনিসংকেত। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মানদণ্ডে আমাদের বিচার ব্যবস্থার সূচক নিম্নগামী।’

এ সময় ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টের কো-কনভেনর সুব্রত চৌধুরীসহ কয়েকশ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এ ক্যারিয়ার গঠন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত 

নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৪ জনের তিন দিনের রিমান্ড

স্ত্রীর কিডনিতে প্রাণ ফিরে পেয়ে ‘পরকীয়ায়’ জড়ালেন স্বামী, অতঃপর...

টিকটক আসক্তিতে ডিপিডিসি কর্মকর্তা!

ঘুমের সময় মুখ দিয়ে কেন লালা পড়ে, প্রতিকার কী 

সুসজ্জিত গাড়িতে পুলিশ কনস্টেবলের রাজকীয় বিদায়

বালু চুরি, সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

এবার মুরাদনগরে নারীসহ ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা

২০১৮ সালের রাতের ভোট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক সিইসি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় হাসপাতালের পরিচালক নিহত

১০

হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত

১১

ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট কর্মসূচি হবে কি না, জানালেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা

১২

ক্রিকেট ছাড়ার পর রেসলিংয়ে নাম লেখাতে যাচ্ছিলেন সাবেক ইংলিশ তারকা!

১৩

তাজিয়া মিছিল নিয়ে ডিএমপির নির্দেশনা

১৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ

১৫

অপ্রত্যাশিত ধসের আক্ষেপে তাসকিন

১৬

ঘুমের মধ্যে দম আটকে যাওয়া কীসের লক্ষণ, হলে কী করবেন?

১৭

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক তৌহিদুলের শুধু বদলি নয়, অপসারণ চান কর্মকর্তারা

১৮

আরবের কোথায় গেলে খরচ কম, কোথায় সবচেয়ে বেশি

১৯

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি

২০
X