গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে।
রোববার (৯ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘খর্ব করা হয় কখন, যখন ক্ষমতা থাকে, তখন যদি কেড়ে নেওয়া হয়। আরপিওর আর্টিকেল ৯১(এ)-তে, কিছু কারণে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া আছে। সেখানে কিন্তু কোনো হস্তক্ষেপ করা হয়নি। সেটাকে কমানো হয়নি। দাড়ি-কমাও সরানো হয়নি। ক্ষমতা যেভাবে ছিল, সেভাবেই আছে। তবে ইসি যখন আর্টিকেলটি সংশোধনের প্রস্তাব দেয়, তখন নতুন একটি সাব-আর্টিকেল ৯১(এ)(এ) সন্নিবেশিত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যদি কোনো পোলিং সেন্টারে (ভোটকেন্দ্রে) যদি কোনো রকম গণ্ডগোল হলে তাহলে সেই নির্বাচনী এলাকার সম্পূর্ণ নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারবেন। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, ধরেন আমার এলাকায় ১১৪টি ভোট সেন্টার আছে। এর মধ্যে ১৪টিতে যদি গণ্ডগোল হয় আর ১০০টিতে সুষ্ঠু ভোট হয়, সেখানে ১৪টার জন্য সম্পূর্ণ নির্বাচন বন্ধ করা হলে সেটা তো গণতান্ত্রিক হবে না। সেটা জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা। ঠিক সে কারণে যে পোলিং সেন্টারে গণ্ডগোল হবে বা একাধিক পোলিং সেন্টারে গণ্ডগোল হলে, গণ্ডগোল হওয়া কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে। কিন্তু অল্প সংখ্যক পোলিং সেন্টারে গণ্ডগোলের জন্য সম্পূর্ণ নির্বাচন বন্ধের অধিকার গণতান্ত্রিকও না এবং জনগণের ভোটাধিকারে হস্তক্ষেপ। সেজন্য এই সংশোধনটা আনা হয়েছে।
সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনই একমাত্র সমাধান। নির্বাচন হবে। আমার মনে হয় না অবাস্তব কোনো দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন আছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন কোনো সংলাপ হবে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে করা এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলেছে, স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয় পুলিশ এবং বিচারকদের চিঠি লিখেছে, এই মামলাগুলো দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। কিন্তু পরিষ্কার করে বলতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার আইনের শাসনে বিশ্বাসী সরকার। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। এ ছাড়া বিচার বিভাগ স্বাধীন। আমরা এমন পত্র লিখি না। দুই মাসের মধ্যে বিএনপি নেতাদের মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে এরকম কোনো চিঠি বা মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এমন কোনো চিঠি দেখাতে পারলে সেটা নিয়ে বাহাস হবে। অন্য কোনো ইস্যু খুঁজে না পেয়ে মিথ্যা ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
এর আগে সকালে সহকারী জেলা এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য চার মাস মেয়াদি ৪৮তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন উপলক্ষে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আইন সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অনিয়মের অভিযোগে ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা কমানো নিয়ে বিরোধীদের আপত্তির মুখে গত ৪ জুলাই সংসদে পাস হয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল, ২০২৩।
মন্তব্য করুন