সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবুর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (৯ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে তিনি ফরিদপুরের ভাঙা এলাকায় শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে গোপন মিটিং করেছেন বলে গোয়েন্দা পুলিশ রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেছে।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামির পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামি শিমুল ভূঁইয়ার জবানবন্দিতে এমপি আনার হত্যা সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে কাজী কামাল আহমেদ বাবুর প্রসঙ্গ উঠে আসে এবং বাবুর সঙ্গে আসামি শিমুল ভূঁইয়ার কিছু পরিকল্পনার কথা প্রকাশ পায়। শিমুল ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে আরও উল্লেখ করেন, সে গত ১৫ মে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসে আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবুর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে এবং ১৬ মে তারা পরস্পর সাক্ষাৎ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা বিভাগ আলামত উদ্ধারের লক্ষ্যে ৮ জুন আসামি শিমুল ভূঁইয়ার সাভারস্থ ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে তার বাসায় একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। পরে মোবাইল ফোনের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মামলার ঘটনা পরবর্তী ১৬ মে হোয়াটসঅ্যাপে আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবুর সঙ্গে শিমুল ভূঁইয়া পরস্পর যোগাযোগ ও কথোপকথনের তথ্য রয়েছে। যা এ মামলার ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দেখা যায়, আসামি ঢাকা সায়েদাবাদ এলাকায় অবস্থান করছে এবং তাৎক্ষণিক ৮ জুন সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবদে সে আসামি শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, গত ১৬ মে রাত সাড়ে ১০টায় শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবু ভিকটিম আনোয়ারুল আজিম আনার অপহরণসংক্রান্তে হোয়াটসঅ্যপে কথা বলে এবং পর দিন ১৭ মে মামলার আসামি শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে আসামি কাজী কামাল আহমেদ বাবু অত্যন্ত পরিকল্পিত উপায়ে ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানাধীন ভাংগা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে গাড়ির ভেতর সাক্ষাৎ করে ভিকটিমকে অপহরণ ও পরবর্তীতে হত্যাসংক্রান্ত ছবি, টাকা-পয়সা লেনদেন বিষয় নিয়ে গোপনীয় মিটিং করে। তাদের পরিকল্পনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না সেটা জানতে চাইলে আসামি ভিন্ন ভিন্ন কথা বলে বিভ্রান্ত করছে।
মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ শিমুল ভূঁইয়া ও কাজী কামাল আহমেদ বাবুর পরিকল্পনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না এবং অজ্ঞাতনামা পরিকল্পনাকারীদের শনাক্তকরণ, গ্রেপ্তার, সঠিক নাম ঠিকানা সংগ্রহের জন্য আসামিকে পুলিশ রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন