তন্ময় উদ্দৌলা, ফরিদপুর
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নদী গবেষণার ডিজির বিরুদ্ধে টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ

নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক। ইনসেটে ডিজি আবু হোরায়রা। ছবি : কালবেলা
নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক। ইনসেটে ডিজি আবু হোরায়রা। ছবি : কালবেলা

দেশের একমাত্র নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট (নগই) ফরিদপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এবার টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সেই প্রতিষ্ঠানের স্বয়ং মহাপরিচালকের (ডিজি) বিরুদ্ধে। নিজের পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে তিনি নিয়েছেন এক অভিনব পদ্ধতি।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি ইজিপিতে বিদেশি ব্যান্ডের ড্রোন ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক -এর দপ্তর থেকে একটি টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে ১ হাজার টাকা দরপত্রের দাম ও জামানত বাবদ ৪৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ছিল টেন্ডার জমাদানের শেষ দিন, টেন্ডার উন্মুক্ত করার দিন নির্ধারণ করা হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে টেন্ডার উন্মুক্ত করা হলে দেখা যায় ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ টেন্ডারে অংশ নেয়। তারা হলো- গ্যালাক্সি ওয়ার্ল্ড, ইউটেক সিস্টেম লি., কিলেস্ট্রাইল টেক লি., হাইড্রল্যান্ড সলিউশন ও মেসার্স আইকনিক ইন্জিনিয়ারিংএন্ড ট্রেডিং কোম্পানি। তাদের জমা করা দরপত্রগুলো যথাক্রমে- ১৩ লাখ ৪৮ হাজার টাকার, ১৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫শ টাকা, ১৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা, ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯শ নব্বই টাকা।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়ার কথা থাকলে ও বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯০ টাকা বেশি দিয়ে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করে নিজের পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার কাজ দিয়েছেন বলে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদাররা অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে সর্বনিম্ন দরপত্র দাখিল করেছেন গ্যালাক্সি ওয়ার্ল্ড নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সর্বোচ্চ দরপত্র দাখিল করেছে মেসার্স আইকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি। নিয়ম অনুযায়ী সর্ব নিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে, ২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯০ টাকা বেশি দিয়ে টেন্ডারের ঠিকাদার নির্বাচনের সত্যতা পাওয়া যায়।

এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের টেন্ডারের সব শর্ত পূরণ করে। মহাপরিচালকের পছন্দের ব্যক্তি শর্তপূরণ করতে না পারায় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯০ সরকারি টাকা বেশি দিয়ে নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করেছেন।

টেন্ডার বাণিজ্যের বিষয়ে অফিস চলাকালে নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দপ্তরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মহাপরিচালক আবু হোরায়রা কালবেলাকে বলেন, অভিযোগের বিষয়টা সত্য না। অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণির ১০টি পদে লোকবল নিয়োগে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছিল। প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠছিল পদ বঞ্চিতরা। যা নিয়ে পরবর্তী মাসে ২৫ মার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে নদী গবেষণার ডিজি ও ডিডির অপসারণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্র-জনতা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেনাবাহিনীর হাতে ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্য আটক 

ইবি ছাত্রের রহস্যজন্যক মৃত্যুর তদন্তের দাবিতে ছাত্রশিবিরের টর্চ মিছিল

বাঙলা কলেজ শিক্ষার্থী শহীদ সাগরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কেশবপুরে ৩১ দফার প্রচারণায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অমলেন্দু দাস অপু

মাদ্রাসা টিকে আছে বলেই আমাদের ওপর বিভিন্ন ঝড় ঝাপটা আসে : ধর্ম উপদেষ্টা 

ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব স্বপ্ন গড়ার সূতিকাগার

রাজবাড়ী জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদ বাঙলা কলেজ শাখার কমিটি গঠন

গণঅভ্যুত্থান মেহনতি মানুষের কষ্ট লাঘব করেনি : সাইফুল হক 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক পোস্ট

মাদকাসক্ত যুবককে পিটিয়ে হত্যা করল মা ও ভাই

১০

এবার পুলিশের সামনেই চাপাতি দেখিয়ে ছিনতাইয়ের ভিডিও ভাইরাল 

১১

বৃষ্টির দেখা নেই, আমন চাষে বিপাকে কৃষক

১২

প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষায় কারা সুযোগ পাবে, বাছাই হবে যেভাবে

১৩

হাসপাতালের লিফটের নিচে পড়ে ছিল রোগীর অর্ধগলিত লাশ

১৪

পরিবারের সবাই ইয়াবা বিক্রেতা, অতঃপর…

১৫

নির্বাচন পেছাতে ‘সংস্কার-বিচারের’ নামে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে : আমিনুল হক

১৬

ডাকাতের রশির ফাঁদে যুবকের মৃত্যু, আহত ২

১৭

সরকার উসকানি দিয়ে এনসিপিকে গোপালগঞ্জ পাঠিয়েছে : ড. রেদোয়ান

১৮

জুলাই আন্দোলনে শহীদ তিন পরিবারে কান্না থামেনি আজও

১৯

মুজিববাদের কবর দিতে গোপালগঞ্জ যাওয়ার দরকার নেই : এ্যানি

২০
X