২০২১ সালে অবৈধভাবে নিয়ে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় সাদেক এগ্রো দায়ী থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে গরুগুলো বাজেয়াপ্ত করে সরকার। সেগুলো রাখা হয় সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে।
জানা গেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে কমদামে মাংস বিক্রির জন্য প্রতি বছর সাভারের ফার্ম থেকে কিছু গরু সরবরাহ করা হয়। সুচতুর মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন প্রভাব খাটিয়ে ব্রাহমা জাতের গরুগুলো সেই তালিকাভুক্ত করান। এর পর নিজের ফার্মের দেশীয় জাতের গরুর সঙ্গে বদল করে ১৭টি ব্রাহমা নিয়ে আসেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তারা জানান, মন্ত্রণালয়ে প্রভাব খাটিয়ে গরু বদলের ব্যবস্থা করেন ইমরান। এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করায় সে সময় কয়েকজন কর্মকর্তাকে হুমকিও দেওয়া হয়। এমনকি কেউ অনৈতিক আবদার না মানলেই তাকে বদরি করিয়ে দেওয়ারও নজির রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘ইমরান কোনো নিয়মনীতি মানেন না। তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না। নিজের খেয়ালখুশিমতো কাজ করেন। আমরা বিরোধিতা করেও পারি না। ঢাকা জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তার একটি অবৈধ গরুর চালান বিমানবন্দরে আটকে দিয়েছিলেন। ইমরান তার প্রভাব খাটিয়ে ওই কর্মকর্তাকে বদলি করান। তিনি এখন নাসিরনগর ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন।’
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘তখন আমার পোস্টিং ছিল বিমানবন্দরে। ব্রাহমা জাতের গরুর একটি চালান আটকে দেই। পরে সেগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাজেয়াপ্ত করে। পরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, আমি নাকি টাকা চেয়েছি। অথচ আমার বড় অফার ছিল। আমি আপস করি নাই, সরকারি নিয়মনীতি বাস্তবায়ন করেছি। সেজন্য চাকরিজীবনে অনেক ভুগতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোহাম্মদ হাবিব মোল্লা কালবেলাকে বলেন, ‘ইমরান একজন মাফিয়া। তিনি কারও কথা শোনেন না। তিনি ডেইরি ফারমার না, ব্রোকার। গরু বেচাকেনা করেন। ঈদের আগে গরু কিনে বিক্রি করেন। তিনি খামারিদের ক্ষতি করছেন।’
মন্তব্য করুন