জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি মেনে নেওয়ায় উচ্ছ্বাসিত ছিল শিক্ষার্থীরা। এরপরই নামে মুষলধারায় বৃষ্টি। এ সময় বৃষ্টিতে ভিজে বিজয় উল্লাস করেন শিক্ষার্থীরা। পরে টানা তিন দিনের আন্দোলন শেষে হাসি মুখে ক্যাম্পাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৬ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন বাজেট বৃদ্ধি করার মাধ্যমে প্রথম দাবির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজেট বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবাসন সংকট নিরসনে অস্থায়ী হল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে, কাজ শুরু হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু হবে, ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিশোর সাম্য বলেন, তারা দাবি মেনে নিয়েছেন। আমরা লেটার মার্ক পেয়ে আন্দোলনে সফল হয়েছি। আমাদের চারটি দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা এতে খুশি। আমাদের বাজেট সম্পূর্ণ না বাড়লেও ১৯/২০ হবে। অবশ্যই এটা ১০/২০ নয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি তারা আশ্বাস দেননি। তারা তো পকেটের টাকা নিয়ে আসবেন না। তাদের বাস্তবায়ন করতে আমাদের সময় দিতে হবে। রেজুলেশন হবে।
আন্দোলনকারী শাহীন আলম বলেন, আমাদের দাবি মুটামুটি মেনে নেওয়া হয়েছে। বলতে পারি ৯০ শতাংশ মেনে নেওয়া হয়েছে। আমরা খুব সন্তুষ্ট বলব না, তবে অসন্তুষ্ট না। কিন্তু খুশি।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফীন বলেন, এ আন্দোলনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এমন সাফল্য অর্জন করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদ বলেন, টানা তিন দিনের সংগ্রাম শেষে আমাদের বিজয় হয়েছে। আমরা এই আনন্দ ধুমধাম করে উদযাপন করতে চাই।
আরেক শিক্ষার্থী মাহফুজ হোসেন বলেন, দাবি আদায় খুব একটা সহজ ছিল না। এজন্য এর আনন্দটাও বেশি। সবাইকে ধুমধাম করে এই বিজয় উদযাপন করার আহ্বান জানাই।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ বলেন, এরা আমাদের জগন্নাথের জাতীয় বীর। এরা যেভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তারা একটি জাতীয় দৃষ্টান্ত। আমাদের দাবি নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ডেকেছেন। আজ শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও অর্থ, শিক্ষা, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কনসার্নে ইউজিসির সাথে বৈঠক করা হয়। আমরা তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমাদের পার্থক্য কোথায়। আমাদের দাবির বাস্তবিকভাবে প্রতিফলিত হবে। আমাদের প্রত্যকটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা ছিল, আমরা তাদেরকে জাতীয় বীর মনে করি। দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। এরপরও যেন এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে।
চার দফা দাবিতে টানা তিন দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এদিন বিকেল ৩.৪৫ মিনিটে গণঅনশন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন শুরু করেন অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী। এদিন সরকার সকল দাবি মেনে নিয়েছে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গণঅনশন ভাঙান ইউজিসি চেয়ারম্যান।
মন্তব্য করুন