বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) তিন শিক্ষার্থীকে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজের দায়ে শহীদ আজিজ হল থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার (১০ আগস্ট) শহীদ আজিজ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদ সরকার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
অফিস আদেশ থেকে জানা যায়, গত ২২ ও ২৩ জুলাই শহীদ আজিজ হলে ‘ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন’ কেন্দ্র করে ৫০তম ব্যাচের চার শিক্ষার্থীর সঙ্গে নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনা ও পক্ষপাতিত্ব করার প্রস্তাব করে হলের কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী। একজনকে গভীর রাতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘটনার বিবরণী হল প্রশাসনকে জানায়।
এর প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেটের ৫৬তম সভায় অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করার দায়ে তিন শিক্ষার্থীকে হল থেকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- ৪৯তম ব্যাচের মুশফিক হোসেন নাবিল, মোসাইদুল ইসলাম তনিম ও হায়াত মাহমুদ জিসান। তাদের সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেল ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করে হল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে শাস্তি ঘোষণার সংবাদে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন সূত্র জানা যায়, বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে শহীদ আজিজ হলে কয়েকজন প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ৫০তম ব্যাচের কয়েকজন প্রার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিটাক মোড়ে ডেকে নেন এবং নির্দিষ্ট একজন প্রার্থীকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আহ্বান করেন। পরে ওই রাতে ৫০তম ব্যাচের একজন প্রার্থীকে হলের অ্যাক্সটেনশনে ডেকে র্যাগ দেওয়া হয়। তাকে ‘ফরমাল ড্রেস’ পরে আসতে বলা হয় এবং সেখানে তার নির্বাচনী যোগ্যতা ও ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অবমাননাকর কথা বলে মানসিক হেনস্তা করা হয়।
কারণ অনুসন্ধান করে জানা যায়, হলজুড়ে একটি জোন বা এলাকাভিত্তিক গোষ্ঠীর আধিপত্য ক্রমশ বাড়ছে এবং তা শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে। ব্রাদার্স জোন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও আশপাশের জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীরা) শহীদ আজিজ হলের প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ জোন বা গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে প্রতিটি ব্যাচ থেকেই প্রার্থী দাঁড় করিয়ে হলে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে চায় এবং যার কারণে এ ঘটনা ঘটল।
মন্তব্য করুন