চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাটল দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের বাসভবন ও পরিবহন দপ্তরে গাড়ি ভাঙুরের ঘটনায় দুটি মামলা তুলে নিতে কোর্টে আপিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘটনায় ১৪ শিক্ষার্থীর নামোল্লেখ করে ৯ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আসামি করে মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দায়ের করা মামলা তুলে নিতে আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।
এর আগে শাটল দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে হাটহাজারী থানায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রধান শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। মামলা দুটিতে সাতজন করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি বাদী হয়ে মামলা করেছিলাম। এখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন করতে বলাই আমরা আবেদন জানিয়েছি। আজকে আমরা কোর্টে যাব, কোর্ট যেটা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই বাস্তবায়ন হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্টারকে এম নুর আহমদের কাছে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মামলার আসামিরা হলেন, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শাকিল হোসেন আইমুন, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের দীপন বণিক দীপ্ত, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রিয়াদ হাসান রাব্বি, ইংরেজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নুর মোহাম্মদ মান্না, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ ভূঁইয়া, পালি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আমিনুল ইসলাম, পদার্থবিদ্যা বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শফিকুল ইসলাম, দর্শন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সাজ্জাদ হোসেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. ইমরান নাজির ইমন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আনিসুর রহমান, ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নাসির উদ্দিন মো. সিফাত উল্লাহ, সংস্কৃত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনিক দাশ, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অনিরুদ্ধ বিশ্বাস এবং একই বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের মো. আজিমুজ্জামান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রামের বটতলী স্টেশন থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে আসা রাত সাড়ে ৮টার শাটলট্রেন চৌধুরীহাট এলাকায় এলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী।
ঘটনার পর ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছালে এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ বক্সের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে তারা। পরে উপাচার্যের বাংলো, শিক্ষক ক্লাব ও পরিবহন দপ্তরে থাকা অন্তত ৬৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন