নতুন শিক্ষাক্রম সম্পূর্ণ বাতিল, নম্বরভিত্তিক লিখিত পরীক্ষা চালু, নবম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন রাখাসহ ৮ দফা দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করবে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন। সকাল ১০টায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এর আগে গত ১০ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল।
অভিভাবকরা জানান, নতুন শিক্ষাক্রমে তাত্ত্বিক বিষয়ের চেয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তুলে দেয়া হয়েছে সাময়িক পরীক্ষাও। পরীক্ষা পদ্ধতি না থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অধ্যয়নমুখী হচ্ছে না। বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় তারা ডিভাইসমুখী হচ্ছে।
তারা জানান, নতুন শিক্ষাক্রমে সবচেয়ে বড় সমস্যা দলগত কার্যক্রমে। দেখা যাচ্ছে- স্কুল থেকে প্রদত্ত দলগত কাজটি করতে হচ্ছে স্কুল পিরিয়ডের পর। যে কারণে ছাত্রছাত্রীদের বন্ধু-বান্ধবীর বাসায় বা অন্য কোথাও একত্রিত হয়ে তা সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এতে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ছাত্রছাত্রী অভিভাবক উভয়কেই। অধিকাংশ অভিভাবক স্কুল ছুটির পর তার সন্তানকে অন্য কারও বাসায় নিয়ে যেতে আগ্রহী নয় এবং স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
অপরদিকে প্রোজেক্টগুলির ইকুইপমেন্ট যন্ত্র না পাওয়া, সেই সঙ্গে চড়া দামের কারণে এগুলি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন অভিভাবকরা।
চলতি বছর থেকে দেশে নতন শিক্ষাক্রম চালু করা হয়। নতুন এই শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে ১ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে। আগামী বছর ৩য়, ৪র্থ, ৮ম এবং নবম শ্রেণিতে যুক্ত হচ্ছে এটি। ২০২৫ সালে যুক্ত হবে ৫ম ও দশম শ্রেণিতে। ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে যুক্ত হবে দ্বাদশ শ্রেণিতে।
সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের ৮ দফা দাবি
শিক্ষানীতি বিরোধী নতুন কারিকুলাম সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে; নম্বর ভিত্তিক ২টা সাময়িক লিখিত পরীক্ষা (৬০ নম্বর) চালু রাখতে হবে এবং ফ্রান্স টেস্টগুলো ধারাবাহিক মূল্যায়ন (৪০ নম্বর) হিসাবে ধরতে হবে; নবম শ্রেণি থেকেই শিক্ষার্থীর আগ্রহ অনুযায়ী বিষয় নির্বাচনের সুযোগ অথবা বিজ্ঞান বিভাগ রাখতে হবে; ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ ইত্যাদি নির্দেশক বা ইন্ডিকেটর বাতিল করে নাম্বার ও গ্রেড ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি রাখতে হবে; শিখন ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক ক্লাসের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং স্কুল পিরিয়ডে সব প্রজেক্ট সম্পন্ন হতে হবে; শিক্ষার্থীদের দলগত ও প্রজেক্টের কাজে ডিভাইস সুখী হতে উৎসাহিত করতে হবে এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে অধ্যয়নমুখী করতে হবে; প্রতি বছর প্রতি ক্লাসে নিবন্ধন ও সনদ প্রদানের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে, প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা চালু রাখতে হবে এবং এসএসসি ও এইচএসসি ২টা পাবলিক পরীক্ষা বহাল রাখতে হবে; সব সময়ে সব শ্রেণিতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে অবশ্যই তা মন্ত্রী পরিষদ এবং সংসদে উত্থাপন করতে হবে।
মন্তব্য করুন