ধর্ষণের মামলায় কারাবন্দি থাকা অবস্থায় মামলার বাদী এক কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ে করলেন আলোচিত ও সমালোচিত সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন উভয়পক্ষের ঘনিষ্ঠজনরা, যার মধ্যে ছিলেন, নাজমা হোসেন, সাবিহা তারিন, খলিলুর রহমান ও সাদেক উল্লাহ ভূঁইয়া।
নোবেলের আইনজীবী জসীম উদ্দিন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইলা মণি জানিয়েছেন, দুপক্ষের সম্মতিতেই বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেনমোহর নির্ধারিত হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
তবে এই বিয়ে নিয়ে নেটদুনিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী পারশা মাহজাবীন পূর্ণি ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এই বিয়েকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক নিষ্ঠুরতার নগ্ন উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে পারশা লেখেন, ‘ধর্ষণের শিকার নারীকে তার ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে করতে বাধ্য করা কখনোই ন্যায়বিচার হতে পারে না! এটি নৈতিকতা ও আইনের সম্পূর্ণ ভগ্নদশার প্রতিচ্ছবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন বেঁচে থাকা নারীর সুস্থতা বা পুনরুদ্ধার কখনোই তার নির্যাতকের সঙ্গে তথাকথিত পারস্পরিক সম্মতি’র মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া উচিত নয়। এ ধরনের রায় বিচারব্যবস্থার পিতৃতান্ত্রিক ও দুর্নীতিগ্রস্ত চেহারাটাই উন্মোচন করে।’
পারশা মনে করেন, ‘এ ধরনের রায় কেবল একজন নারীকে নয়, সব ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকারদের জন্য এক ভয়ঙ্কর বার্তা বহন করে, যেখানে ট্রমা হয়ে ওঠে দর কষাকষির বস্তু।’
উল্লেখ্য, ওই শিক্ষার্থী গত মে মাসে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়, নোবেল সাত মাস ধরে তাকে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মে নোবেল গ্রেপ্তার হন এবং বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এই মামলায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার ১৯ জুন নির্দেশ দেন বাদী ও আসামির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরদিন কারাগারে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন