ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মধ্যেই ভয়াবহ মোড় নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি। এবার সরাসরি ইরানের ৩টি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে কয়েকগুণ। আতঙ্ক আর আশঙ্কার এই প্রেক্ষাপটে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রবাসী ইরানি অভিনেত্রী মান্দানা করিমি।
বর্তমানে ইউরোপে অবস্থানরত মান্দানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক আবেগঘন পোস্টে লিখেছেন, ‘আমি ঠিক নেই। চেষ্টা করছি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার, কিন্তু পারছি না। প্রতি মুহূর্ত কাটছে দুশ্চিন্তায়। কীভাবে ঠিক থাকি, যখন দেখছি শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে?’
যুক্তরাষ্ট্রের নীরব হামলা নিয়ে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি লেখেন, ‘শুধু ফিলিস্তিন কিংবা ইরান নয়, সারা বিশ্বের ওপরই যেন মার্কিন হামলা চলছে। অথচ সবাই নীরব। যেন কিছুই ঘটছে না।’
নিরাপদ ইউরোপে থেকেও মান্দানার মন পড়ে রয়েছে নিজের মাতৃভূমিতে। তার ভাষায়, ‘আমি শান্ত রাস্তায় হাঁটছি, কিন্তু মনে হয় আমি ভূত। আমার একটা অংশ এখনও রয়ে গেছে ইরানে— মা, ভাই, ভাইপো-ভাইজিদের সঙ্গে। মনে হচ্ছে পরের বোমাটা হয়তো আমাদের বাড়িতে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না। কিন্তু নিজের দেশকে পুড়তে দেখা, এবং সেই আগ্রাসনের প্রশংসা সহ্য করা যায় না। ইরান শুধু একটি দেশ নয়— এটা আমার মায়ের হাতের ছোঁয়া, ধুলোর মাঝে জুঁইফুলের ঘ্রাণ, আমার শৈশবের ঘুমপাড়ানি গান।’
বিশ্ববাসীর উদ্দেশে মান্দানার অনুরোধ, ‘চুপ করে বসে থাকবেন না। দয়া করে প্রতিবাদ করুন। আপনাদের নীরবতা আমাদের নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সত্যিই কিছু ভয়ানক ভুল হচ্ছে।’
উল্লেখ্য, রোববার ভোররাতে ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহান পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান। ব্যবহার করা হয় বিধ্বংসী ‘বাঙ্কার ব্লাস্টার’ বোমা। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিয়েছে। আর ইসরায়েল চালিয়ে যাচ্ছে টানা হামলা।
বিশ্ব যখন যুদ্ধের দিকে হেঁটে যাচ্ছে, তখন এক অভিনেত্রীর কণ্ঠ হয়ে উঠে এল এক দেশের আর্তনাদ ‘আমার দেশ পুড়ছে, অথচ সবাই নীরব!’
মন্তব্য করুন