কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২৪, ১২:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

চোখের ছানি রোগে ভুগছে দেশের ছয় লাখ মানুষ

চোখের ছানি রোগে ভুগছে দেশের প্রায় ৬ লাখেরও বেশি মানুষ। ছবি : সংগৃহীত
চোখের ছানি রোগে ভুগছে দেশের প্রায় ৬ লাখেরও বেশি মানুষ। ছবি : সংগৃহীত

চোখের ছানি রোগে ভুগছে দেশের প্রায় ৬ লাখেরও বেশি মানুষ। প্রতিবছর নতুন করে রোগী বাড়ছে দুই লাখের মতো। যার ৮০ শতাংশই গ্রামে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ভিশন সেন্টারসহ স্থানীয় পর্যায়ে চিকিৎসার পরিধি বাড়লেও অসচেতনতা ও অবহেলায় চিকিৎসার বাইরে বহু রোগী। শতভাগ নিরাময়যোগ্য এ রোগ প্রতিরোধে সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া ও রোগীর পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ আই হসপিটালে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারেক্ট অ্যান্ড রিফ্রেক্টিভ সার্জন্স (বিএসসিআরএস) আয়োজিত ছানি সচেতনতা প্রোগ্রাম ও সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা এসব তথ্য জানান।

চলতি জুন ছানি সচেতনতা মাস উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ছানি রোগের ৮০ ভাগই থাকে গ্রামে। তাদের মধ্যে সচেতনতার বড় অভাব রয়েছে। ছানি পরিণত হওয়ার আগে তারা গুরুত্ব দেন না। বিশেষ করে অস্ত্রোপচার করতে রোগী ও পরিবারের সদস্যরা অবহেলা করেন। অথচ শুরুর দিকে ব্যবস্থা নিলে অনেকাংশে অপারেশন ছাড়াই এ রোগ থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বিনামূল্যে চোখের ছানি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিচ্ছে। ছানি যে একটা নিবারণযোগ্য রোগ সে সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই। অথচ সুস্থ হলে নিজের কাজ যাতে নিজেই করতে পারে, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হয় না। অধিকাংশ রোগী বয়স্ক হওয়ায় পরিবারের অন্য সদস্যরা অবহেলা করেন। ভুক্তভোগীরা চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে মানসিক সমস্যায় দিন পার করেন। এতে করে কর্ম দক্ষতা কমে যায়।

বিএসসিআরএসর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডা. মাহবুব বলেন, গত কয়েক দশকে চোখের চিকিৎসা যতটা আধুনিক হয়েছে অন্যকোনো চিকিৎসায় হয়নি। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সার্জারি হয় ছানি। তারপরও আমাদের সচেতনতার ব্যাপক ঘাটতি থেকে গেছে। এজন্য শুধু সরকার নয় বেসরকারি হাসপাতাল ও বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসলে ছানিজনিত রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।

বিএসসিআরএস’র মহাসচিব ডা. ইশতিয়াক আনোয়ার বলেন, চোখের ছানিজনিত অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পেতে শুধু চিকিৎসকেরা নয় গণমাধ্যমকেও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। ছানি বেশিরভাগ হয়ে থাকে বয়স্ক ব্যক্তিদের। যখন তাদের আর নিজস্ব কর্মক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ থাকে না। এজন্য পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে। গুরুতর আকার রূপ নেওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া গেলে মুক্তি সম্ভব।

বিএসসিআরএসর সভাপতি অধ্যাপক ডা. অধ্যাপক ডা. আশরাফ সাঈদ বলেন, আমাদের দেশে বাবা-মায়ের ছানি হলে সন্তানরা অপারেশন করতে চায় না, অবহেলা করেন। তাই পরিবারের সদস্যদের সচেতনতা জরুরি। এটি হলে অনেক বয়স্ক মানুষ নিজের ওপর নির্ভরশীল হতে পারবে। অস্ত্রোপচার করলেই যে ছানি ভালো হয়ে যাবে গ্রামের অধিকাংশ মানুষের ধারণা নেই। বর্তমানে উপজেলা পর্যায়েও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সক্ষমতা রয়েছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচার হচ্ছে। শিক্ষিতদের মধ্যেও অসচেতনতা রয়েছে। অস্ত্রোপচার না করলে মানসিক স্বাস্থ্যে অনেক বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাকাডেমি অব অপথালমোলজির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন বলেন, এক সময় ছানি না পেকে যাওয়া পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করা হতো না। সেখান থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসার কারণে খুব সহজেই কম সময়ে করা যাচ্ছে। আমাদের কাছে যারা আসে তারা চিকিৎসার আওতায় আসলেও বহু রোগী ঘরে থাকছে, চিকিৎসা করাচ্ছে না। অথচ সময়মতো অস্ত্রোপচার হলে শতভাগ দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, আঘাতজনিত কারণে শিশুরা এবং বয়স বেড়ে গেলে বয়স্কদের ছানি পড়ে। এজন্য সচেতনতার সীমা-পরিসীমা নেই। বাচ্চারা আঘাত পেলে রেটিনা ঠিক আছে কি না সেটি দেখতে হবে, না হলে দ্রুতই তার ছানি পড়বে। আমরা ছানি সম্পর্কে অবহেলা করি। এজন্য ছানি সমস্যা ও কীভাবে বেঁচে থাকা যায় সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন করতে হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকে এ ব্যাপারে কাজে লাগানো যেতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় উপজেলা পর্যায়ে ভিশন সেন্টার স্থাপন হচ্ছে। পাশাপাশি সোসাইটির পক্ষ থেকে গ্রামাঞ্চলে ক্যাম্প করা হয় বলেও জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এনবিআরের সহকারী কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস বরখাস্ত

সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে যেসব জেলায় 

‘কার্টা ব্লু’ ভিসা নিয়ে বাংলাদেশিদের সতর্ক করল ইতালি

যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ড. মুজিবের ছেলের বিয়েতে সস্ত্রীক তারেক রহমান 

আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহত, হেফাজতের শোক ও সহায়তার আহ্বান

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কর্মসূচি দিল ছাত্রদল

বনানীর সেলসিয়াস সিসা লাউঞ্জে পুলিশের অভিযান

অবশেষে মাদক সম্রাজ্ঞী আ.লীগ নেত্রী স্বপ্না আক্তার আটক

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে ফেরার পথে জাগপা সভাপতিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম

আদাবরে পুলিশের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

১০

নাটোরে ডা. আমিরুলকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি ড্যাবের

১১

গাজীপুরের কমিশনারের দায়িত্ব থেকে সরানো হলো নাজমুল করিমকে

১২

একাত্তরে ভুল করেছেন, এখনো ভুলের রাজনীতিতে আছেন : টুকু

১৩

দুই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার সাকিব ও সিকান্দারকে ‘এক’ করলেন জুলফিকার!

১৪

বিএনপিকে এনসিপির শুভেচ্ছা / ‘আমরা তর্কবিতর্ক করব কিন্তু পারস্পরিক সৌহার্দ্য থাকবে’

১৫

পুরো সেপ্টেম্বরের পূর্বাভাস জানাল আবহাওয়া অফিস

১৬

নদীতে জাল ফেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা, জেলের মৃত্যু

১৭

ক্ষমা চাইলেন রিটকারীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া সেই শিক্ষার্থী

১৮

আহত চবি শিক্ষার্থীদের দেখতে চমেকে শাহজাহান চৌধুরী

১৯

জাঁকজমক আয়োজনে রুয়েটে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

২০
X