যক্ষ্মা নিরাময় ও প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ কিন্তু অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচির অভাবে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে। কারণ যক্ষ্মা রোগী সামজিক বঞ্চনা, অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হওয়ায় তারা রোগ সম্পর্কে কাউকে জানাতে চায় না। ফলে চিকিৎসা বিঘ্নিত হয়।
বুধবার (২১ জুন) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে অধিকারভিত্তিক ও জেন্ডার বৈষম্যহীন যক্ষ্মা সেবা প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইমুনোলজি অব বাংলাদেশ (আইএসিআইবি) এর উদ্যোগে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের যক্ষা পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ ফেসিলিটি ফর সিভিল সোসাইটি প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন আইএসিআইবি'র পরিচালক সভারঞ্জন শিকদার। টিবি সিচুয়েশন ইন বাংলাদেশ-২০২০ এর পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, বিশ্বের শীর্ষ ১০টি যক্ষ্মা রোগীদের দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠতম। দেশে তিন লাখ ৬০ হাজার যক্ষ্মা রোগী রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার শিশু। প্রতি মিনিটে একজন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদের মধ্যে এক লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ জন রোগীর খোঁজ পাওয়া যায় না। এই সংখ্যার মধ্যে ২০ হাজার ৬৩৭ জনই শিশু।
পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা যায়, সাড়ে পাঁচ হাজার শিশু সহ ২০২০ সালে ৪৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় যক্ষ্মা রোগে। এই হিসেবে দেখা যায় প্রতি ১২ মিনিটে একজন যক্ষ্মা রোগীর মৃত্যু হয়।
অনুষ্ঠানের আইএসিআইবি'র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন সভাপতিত্বের বক্তব্যে জাতিসংঘে মাল্টিস্টেকহোল্ডার হেয়ারিং অধিবেশনে অংশগ্রহণের আলোকে নির্ধারিত ৬টি মূল আহ্বান তুলে ধরেন। জাতিসংঘের ৭৮তম অধিবেশনে এ মূল আহ্বান বিশ্বের সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কাছে তুলে ধরা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি। তিনি যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে নতুন ডায়াগনস্টিক, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার ও টিবি-সিআরজি পদ্ধতিকে গ্লোবাল ফান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সেক্রেটারি হাসান সোহেল যক্ষ্মা নির্মূলে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন