ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনকে জাদুঘর করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবনের দিকে অনেকেরই লোভ থাকে। এটি ঔপনিবেশিক শাসনের একটি হেরিটেজ। অনেকে এখানে ছাত্রীদের হল করার কথা বলেছেন। তবে যেহেতু ঔপনিবেশিক শাসনের স্মৃতিচিহ্ন, এটি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মিউজিয়াম (জাদুঘর)’ হতে পারে।
শনিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কী চাই?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ এবং সুশাসনে জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারও সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনি সিরাজ মাহবুব, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী প্রমুখ। সভায় লিখিত বক্তব্যে দীর্ঘমেয়াদে সরকারের করণীয় হিসেবে ১৩টি পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, উপাচার্যের বাসভবনটি স্বৈরাচার জাদুঘর হওয়া উচিত। স্বৈরাচারে কিভাবে হত্যা করলো, কি অস্ত্র ব্যবহার করলো, কারা হত্যার শিকার হলো, সেসব তথ্য সেখানে থাকা উচিত। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ স্বৈরাচারী হওয়ার সাহস না করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, একইভাবে আয়নাঘর নির্যাতনের জাদুঘর করা উচিত। এই স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলা যাবে না। যাতে প্রমাণ থাকে যে, সে সময় তারা আয়নাঘরে কি কি করেছেন।
সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেছেন, আমরা এখন দায়িত্বের বোঝা নিয়ে বসেছি। এখানে (মতবিনিময় সভায়) এমন অনেক কথা উঠে এসেছে, সেটির গভীরে যদি যেতে পারি, সেটিকে ধরে যদি একটি কর্মপন্থা তৈরি করতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসনের ভেতর আনতে পারি, আমি নিশ্চিত আমরা একটা পর্যায়ে পৌঁছাব। আমি আপনাদের কথাগুলো নিয়ে যাচ্ছি অন্তরে। আমার জায়গা থেকে শুধু বলব, আমরা জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব। কারণ, আমাদের জন্য বারবার সুযোগ আসবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রথমেই বলতে হবে, তারা কী কী কাজ করবেন। আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে যার আদেশে জুলাই হত্যাকাণ্ড হয়েছে অতি দ্রুত তার বিচারের জন্য আবেদন করতে হবে।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের আশেপাশে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন, যারা স্বৈরতন্ত্রের দোসর ছিলেন। তাদের হাতে এখনও রক্ত লেগে আছে। তারা এখন পিঠ আর চাকরি বাঁচানোর জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলছেন। আবার অনেক মন্ত্রণালয় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে স্বৈরাচারের দোসররা লুকিয়ে রয়েছে। তাদের না সরালে ফেরেশতাকে উপদেষ্টার আসনে বসালেও আমাদের আশা পূরণ হবে না।
মন্তব্য করুন