কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘পা হারিয়েছি তাতে কী, দেশ তো স্বাধীন হয়েছে’

মো. জাকির শিকদার। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া
মো. জাকির শিকদার। ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

আমার পা কাটা গেছে সেটা মনেই হচ্ছে না, আমার এখনো মনে হচ্ছে পা আছে। কিন্তু যখন পায়ের দিকে যখন তাকাই, তখন দেখতে পারি ‘পা’ টা আর নেই। দেশের জন্য পা দিতে পেরেছি সেজন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। এভাবেই নিজের পা হারানো কথা শোনাচ্ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পা হারানো মো. জাকির শিকদার।

তিনি বলেন, আমার একটা পায়ের কারণে দেশটা স্বাধীন হয়েছে, জুলুমের শেষ হয়েছে, এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা।

তিনি আরও বলেন, সেদিন রাত আনুমানিক ৯টা বাজে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে একটু সামনে অনেকে আহত ছিল। আমার কাছে পানি ছিলো, আমি তাদের পানি খাওয়াচ্ছিলাম। হটাৎ আমার পায়ে গুলি লাগে। একটা ছেলে আমাকে ধরে হাটিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু আমার পায়ে গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছিল পায়ের জয়েন্ট খুলে গেছে আমি হাঁটতে পারছিলাম না। আমি মাটিতে পড়ে যাচ্ছিলাম। তখন আরেকজন কোথা থেকে একটা গামছা এনে আমার পা টা বাঁধলো। তারপর একটা রিকশায় ওঠালো। একটুপর একটা অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেল। আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানো হলো। অ্যাম্বুলেন্সে তিন-চারজন গুলি খাওয়া লোক ছিলো। আমাদেরকে ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ফরাজীতে নেওয়ার পর তারা বলল এখানে আমার কিছুই হবে না। আপনারা কষ্ট করে পঙ্গুতে নিয়ে যান। ঐদিন রাস্তার অবস্থা খুব ভয়াবহ ছিল তারপরে একটা অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেওয়া হয় আমাকে। অ্যাম্বুলেন্সে আরেকজন গুলি খাওয়া লোক ছিলো। একটু পরে তিনি মারা যান। তখন আমার মানষিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।

আমি অ্যাম্বুলেন্সকে বললাম আমাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে। আমার অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো, ব্লিডিং হচ্ছিল। ঢাকা মেডিকেলে আসার পরে স্ট্রেচার পাওয়া যাচ্ছিল না, আধাঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে স্ট্রেচার ম্যানেজ করে ভিতরে গেলাম। তারপরে দুই হাতে দুইটা স্যালাইন দিল আর বলল তিন ব্যাগ ব্লাড ম্যানেজ করতে। তারপর এক্স-রে রিপোর্ট দেখে আমাকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করা হয়।

পঙ্গু হাসপাতালে হাড়ের কাজটা শেষ তারা বলল হারের কোন প্রবলেম নাই ৫-৬ মাস পর এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। দুইদিন পর তারা বলল আপনার পায়ের রগে হয়তো সমস্যা, আপনারা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (এনআইসিবিডি) চলে যান। এনআইসিবিডিতে গেলে তারা বলে আপনাদের টাইম শেষ এখন আর রোগের কিছু করা যাবে না পা ফেলে দিতে হবে। তারপর ২১ তারিখে আমার পা টা কেটে ফেলে দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি গুলশানে একটা শোরুমে জব করতাম। আমরা চার ভাই এক বোন। আমার মা আছে, বাবা মারা গেছে। সরকার যেন আমাদের প্রতি সুনজর দেন। সরকারের কাছে দাবি আমাদের যেনো একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জেলেনস্কিকে আলটিমেটাম দিলেন ট্রাম্প

পূর্ববিরোধে থেমে গেল জীবনের প্রাণ 

সমর্থন করার জন্য ধন্যবাদ জানালেন মিথিলা

সন্দেহ-অবিশ্বাসে দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয় : রিজওয়ানা

পুরান ঢাকার অধিকাংশ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ : রাজউক চেয়ারম্যান

অভিজ্ঞতা ছাড়াই নিয়োগ দিচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ

এসএমসিতে পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ

দেশে ফের ভূমিকম্প

৪৯১ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে বাংলাদেশ

যুবদল নেতা বহিষ্কার

১০

টেরিটরি সেলস ম্যানেজার পদে নিয়োগ দিচ্ছে ট্রান্সকম

১১

জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা 

১২

২৪ ঘণ্টার মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস

১৩

প্রাক্তন স্ত্রীকে চমকে দিলেন আমির খান

১৪

ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তারে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের 

১৫

বিশ্বকাপে প্রথম পদক নিশ্চিত করল বাংলাদেশ

১৬

যেসব জেলা রয়েছে ভূমিকম্পের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে

১৭

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সম্ভাব্য গ্রুপিং প্রকাশ, বাংলাদেশের গ্রুপে কারা

১৮

দিল্লিতে ভয়াবহ বিপর্যয়, স্কুল-কলেজে নতুন নির্দেশনা

১৯

‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে চিকিৎসকের আপত্তিকর ভিডিও, নারীসহ গ্রেপ্তার ৪ 

২০
X