বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২
কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ১১:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শেখ হাসিনার মধ্যে বঙ্গমাতার অকুতোভয় চরিত্রের প্রতিফলন রয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি : সংগৃহীত
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি : সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা এক অবিচ্ছেদ্য নাম মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ইতিহাসে একজন রাষ্ট্রনায়কের সহধর্মিনীই নন, তিনি বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের অন্যতম নেপথ্য প্রেরণাদানকারী। বঙ্গমাতা আজীবন বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে বাঙালির মুক্তির প্রেরণা ও সাহস যুগিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে তার মায়ের সেই অকুতোভয় চরিত্রের প্রতিফলন রয়েছে।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের আশ্রয়দাতা দেশগুলো ফেরত পাঠাতে সহযোগিতা করছে না বলে জানান।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. মোমেন।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতার প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। সম্মানিত আলোচক ছিলেন বরেণ্য কথাসাহিত্যিক, লেখক ও ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সবার সহযোগিতা ও সমর্থন চেয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুনিরা ৭৫’র ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বঙ্গমাতা ও পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর কোথাও নেই। রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে তার স্ত্রী, ছেলে, পরিবারের প্রায় ১৭ জনকে হত্যা করা হয়। এমনকি ১০ বছরের ছোট্ট শিশুকেও হত্যা করা হয়। এটা বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্ক এবং লজ্জা। এই আত্মস্বীকৃত খুনিদের পাঁচজন এখনও বিদেশে পালিয়ে আছে। এদের মধ্যে তিনজন কোথায় আছে জানি না। বাকি দুজন কোথায় আছে জানি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা যেসব দেশে আছে, সেইসব দেশ বিভিন্ন অজুহাতে তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না। এই ঘাতকদের বিচারের সম্মুখীন করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

নতুন প্রজন্মকে বঙ্গমাতা সম্পর্কে জানাতে তার জীবনী স্কুলের পাঠ্যবইয়ে সংযুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে সেলিনা হোসেন বলেন, একজন মানুষ তার সব চিন্তা-চেতনাকে কাজে লাগিয়ে সামগ্রিক জনকল্যাণে কীভাবে অবদান রেখেছেন তার বলিষ্ঠ দৃষ্টান্ত বঙ্গমাতা।

বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই বইয়ে বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন তার রেণুর নেপথ্য অবদানের কথা। এই বই পড়ে জেনেছি, সংকটকালে বঙ্গমাতা কীভাবে নিজের গয়না বিক্রি করে সংসার ও রাজনীতি সামলেছেন।

বঙ্গমাতাকে নিয়ে বই রচনা ও তা স্কুলে পাঠ করানোর ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানরা জানুক তিনি কীভাবে ৪৭ পরবর্তী সময় থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে নিরন্তর সহযোগিতা করেছেন।

বঙ্গমাতা জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সাথী ছিলেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির পথে সারাজীবন ছায়া হয়ে থেকেছেন বঙ্গমাতা। দেশের প্রথম ফার্স্ট লেডি হয়েও বিলাসী জীবনযাপন করেননি। নীরবে-নিভৃতে তিনি বঙ্গবন্ধুর জন্য, বাংলাদেশের মানুষের জন্য শুধু দানই করে গেছেন। তিনি আত্মত্যাগের প্রতীক। তার অসীম ধৈর্য সবার জন্য অনুকরণীয়।

বঙ্গমাতার পূর্ণাঙ্গ জীবনী লেখার ওপর গুরুত্বারোপ করে শাহরিয়ার বলেন, মহীয়সী এই নারী একজন সার্থক সহধর্মিণী ও আদর্শ মাতার পাশাপাশি নিজেকে একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলেন। তার স্মরণশক্তি অত্যন্ত প্রখর ছিল। আন্দোলন চলাকালে সব ঘটনা জেলখানায় সাক্ষাতের সময় বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়ে আসতেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগকে সে নির্দেশনা জানাতেন।

পররাষ্ট্র সচিব বঙ্গমাতার গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কথা স্মরণ করে বলেন, বঙ্গমাতা কোনো সাধারণ নাম নন, তিনি বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামে অন্যতম প্রেরণা দানকারী।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল শুরু, ভাঙচুরের ঘটনায় কমিটি

আইপিএলে ভালো করলেও ভারত দলে জায়গা নিশ্চিত নয়

ফেব্রুয়ারির কত তারিখে রোজা শুরু হতে পারে 

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

১০

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

১১

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

১২

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

১৩

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১৪

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১৫

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১৬

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১৭

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

১৮

ডেজার সভাপতি প্রকৌশলী রুহুল আলম, সম্পাদক প্রকৌশলী চুন্নু

১৯

নানা আয়োজনে গাকৃবিতে মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন

২০
X