এগারো দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে প্রতিবন্ধীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ করেন সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ। পরে দুপুর ১টায় প্রেস ক্লাব অভিমুখে পদযাত্রা করেন তারা।
এ সময় প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব ইফতেখার মাহমুদ বলেন, জাতীয় বাজেটে আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। গত ৩০ বছর ধরে রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সবার কাছে আমাদের দাবিগুলো লিখিত আকারে দিয়েছি। আমরা বিনিময়ে তিনটা জিনিস পেয়েছি। ২০০৫ সালে ২০০ টাকা দিয়ে শুরু হয় ভাতা কার্যক্রম। এখন পাচ্ছি ৮৫০ টাকা। আমাদের জন্য এই ভাতা যথেষ্ট নয়। আমাদের এই ভাতা বাড়ানোর কথা বলা হলেও ভাতা সেভাবে বাড়ানো হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই মানবেতর জীবন আর সহ্য করতে পারছি না। আমরা কর্মসংস্থান পাই না, চাকরি পাই না। বাংলাদেশ অনেক সূচকে উন্নত হচ্ছে কিন্তু প্রতিবন্ধী উন্নয়নে বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে না। গত ৪ জুন আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দাবি নিয়ে যেতে চেয়েছি কিন্তু আমাদের পুলিশ আটকে রেখেছে। ১২ জন ভাইয়ের রক্ত ঝরিয়েছে তারা। আমরা তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। আমরা স্বাধীন দেশ চেয়েছি একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ার জন্য। কিন্তু এই স্বাধীন দেশেই আমরা আজ বৈষম্যের শিকার।
তিনি আরও বলেন, আজকে পুলিশ আমাদের মাইক নিয়ে গেছে। আমাদের এখানে আন্দোলনে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে যেন আমরা একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আমাদের চতুর্দিকে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে যেন আমরা সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলনে নেমেছি। আমদের দাবিগুলো অরাজনৈতিক। বঙ্গবন্ধু চেয়েছে বাঙালির অধিকার। আমরা আর আশ্বাস চাই না আমরা চাই বাস্তবায়ন। আমাদের কণ্ঠ আর অবরুদ্ধ করা যাবে না।
তাদের ১১ দফা দাবি হলো ২০২৩-২৪ বাজেটে প্রতিবন্ধীদের ভাতা ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা ও শিক্ষা উপবৃত্তি মাসিক ২ হাজার টাকা করা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভাতা উপবৃত্তি উভয় বরাদ্দ করা, প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকরিত নিয়োগে বিশেষ নীতিমালা করা, চলতি বাজেটে ১ হাজার কোটি টাকা প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা তহবিল গঠন করা, অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তর কার্যকর করা, সব প্রতিষ্ঠানে বাংলা ইশারা ভাষার দোভাষী নিশ্চিত করা, শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় শ্রুতিলেখক নীতিমালা প্রণয়ন করা, প্রতিবন্ধীদের একটি বাড়ি একটি খামার ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করা, গুরুতর প্রতিবন্ধীদের স্বাস্থ্য ও কেয়ারগিভার ভাতা চালু করা, প্রবেশগম্য অবকাঠামো ও গণপরিবহন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করা, সব পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট দেওয়া।
মন্তব্য করুন