কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

সরকারি দলের সংখ্যালঘুবান্ধব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা

জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখছেন অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত। ছবি : কালবেলা
জাতীয় প্রেস ক্লাবে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখছেন অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত। ছবি : কালবেলা

সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু স্বার্থবাদর অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের দাবিতে গণঅনশন, গণঅবস্থান ও মহাসমাবেশ করবে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্য মোরচা।

আগামী ৮ ও ২৩ সেপ্টেম্বর সারা দেশের সব জেলা-মহানগর এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গণঅনশন ও গণঅবস্থান, ৬ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের কর্মসূচি পালিত হবে।

আজ সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ১৮টি জেলা ও ২টি মহানগর; ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ১২টি জেলা ও ২টি মহানগর, ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সিলেট বিভাগের ৪টি জেলা ও ১টি মহানগর; ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার চট্টগ্রাম বিভাগের ১২টি জেলা ও ১টি মহানগর, ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার ঢাকা বিভাগের ১৩টি জেলা ও ২টি মহানগরে ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার গণঅনশন ও গণসমাবেশ এবং ২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কেন্দ্রীয় গণঅনশন ও গণঅবস্থান।

এ ছাড়া আগামী ৬ অক্টোবর ২০২৩ শুক্রবার বেলা ২টায় ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাড. দাশগুপ্ত বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে অর্থে সংসদ নির্বাচনের আর মাত্র চার মাস বাকি। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ পরাশক্তিসমূহের কূটনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হওয়ায় আমরা এ দেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। আমরা এ ব্যাপারে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণের সচেতন দৃষ্টি কামনা করছি। আমরা আশা করি, আমাদের দেশের সব রাজনৈতিক দল দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য অধিকতর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসবেন।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে এ সংক্রান্ত লক্ষ্য ও পরিকল্পনা হিসেবে যা বিধৃত রয়েছে, তা হলো- অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে।‌ জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে। সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে। সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি, জলাধার ও বন এলাকায় অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ভূমি কমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, দলিত ও চা বাগান শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা এবং সুযোগ সুবিধা অব্যাহত থাকবে। সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব প্রকার আইন ও অন্যান্য অন্যায় ব্যবস্থার অবসান করা হবে। ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারার স্বাতন্ত্র সংরক্ষণ ও তাদের সুষম উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হবে।

সাড়ে চার বছরেরও বেশি সময়ে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, ২০২১ সালের মধ্যে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে এগিয়ে আসবে। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনোরূপ অগ্রগতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও এর নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সংগঠনসমূহের ঐক্যমোর্চা সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমিকভাবে আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে এসেছে। আন্দোলনের পাশাপাশি ঐক্য পরিষদ সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায়ও বসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ারের সাথে ইতোমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে । কিন্তু তা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত তেমন কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশন এবং সামনের অধিবেশনে প্রতিশ্রুতিসমূহ বিল আকারে উপস্থাপন করে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় ।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত, রঞ্জন কর্মকার, ভোলানন্দগিরি আশ্রমের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ হল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ডি আইজি শ্রীনিবাস চন্দ্র মাঝি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় / এআই ক্যারিয়ার ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত

‘র’-এর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাউকে উপদেষ্টা করা হয়নি : জুলাই ঐক্য

চবিতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

রাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট শুরু বৃহস্পতিবার 

শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে পালালেন প্রধান শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাকারী থালাপতি বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা

যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ যৌন অপরাধ করে ভারতীয়রা

স্ত্রীর জন্য দোয়া চাইলেন প্রযোজক ইকবাল

ইকসু গঠন ও নির্বাচনের গঠনতন্ত্র প্রণয়নে ১১ সদস্যের কমিটি

বনজ কুমারের মামলায় খালাস পেলেন ইলিয়াস

১০

নদীতে চর ধসে আতঙ্কে শতাধিক পরিবার

১১

ওয়াই-ফাইয়ের রেডিয়েশন থেকেও হতে পারে ভয়াবহ রোগ!

১২

আসনসীমা নিয়ে শুনানি শেষ, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ শিগগিরই 

১৩

বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ঝোড়ো হাওয়ার শঙ্কা

১৪

মুহূর্তের ব্যবধানেই ভেস্তে গেল বন্দরে ডাকাতির পরিকল্পনা

১৫

মেসিকে না পারলেও রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেছেন টেইলর সুইফট

১৬

কিডনি রোগ হলে কী কী লক্ষণ হবে শরীরে

১৭

এবার ৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় সমন্বয়ক রিয়াদ রিমান্ডে 

১৮

কাগজপত্র জালিয়াতি করে অধ্যক্ষ হয়েছেন জাকির হোসেন

১৯

বিপিএলে ১ বলে ১৫ রান দেওয়া বোলার এবার দিলেন ১ বলে ২২ রান!

২০
X