এডিস মশা নিধন প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, মশা মারার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের একার না। জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই কাজ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন চিকিৎসার দায়িত্ব ওনার, কথাটা ওনি ঠিকই বলেছেন। মশা মারার ব্যাপারে আমরা এবং জনগণ; আমরা একা না। নেতৃত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই কাজটা করি এবং করছি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ ও আন্তরিকতার কোথাও ঘাটতি নেই।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ আক্রান্ত হবে স্বাভাবিকভাবে এবং চিকিৎসা নেবে। চিকিৎসা তো ওনারাই করবেন। আমাদের পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যেমন, তেমন এই দায়িত্বটা পালনের জন্য জনসম্পৃক্ততা অপরিহার্য। জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যম দিয়ে মশা নিধন কার্যক্রমের সফলতা অর্জন করা যেতে পারে। জনগণ যদি অংশগ্রহণ না করতো তাহলে ঢাকা শহরে শনাক্ত রোগী ২০ লাখ হতো, এটা আমার ধারণা।’
সবাই যদি অংশগ্রহণ করে তাহলে ডেঙ্গু নির্মূল করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ভাত দেওয়ার মুরোদ নেই কিল দেওয়ার গোঁসাই—আমরা জনপ্রতিনিধিদের খালি গালি দেব উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বটা কী আর না করলে তাকে সব সময় জবাবদিহিতার ভেতরে নিয়ে আসা; এ রকম একটা ব্যবস্থা মনে হয় আমাদের করলে, জনপ্রতিনিধিরা কিন্তু সারা পৃথিবীতে দেশের পরিবর্তন করেছে।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, একজন মেম্বার তিন হাজার লোকের প্রতিনিধিত্ব করে। এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে তার সঙ্গে কাজ করে প্রায় ৩০০-৪০০ লোক, প্রতিটি ওয়ার্ডে। কোনো না কোনোভাবে করায়। ওরা দুর্যোগ, দুঃসময়, দুর্দিন, বিপদে-আপদে করে। ওদের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আবার কিছু সংখ্যক ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে! আমরা যদি এগুলোকে... যেমন কোভিডের সময় ত্রাণ বিতরণ নিয়ে কিছু কিছু অভিযোগ উত্থাপিত হওয়া আরম্ভ হলো, আমি এক দিনে ১২ জন চেয়ারম্যান-মেম্বারকে বরখাস্ত করলাম। এরপর আস্তে আস্তে দেখা যায় এটা ঠিক হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পরে দেখা গেল, দশমিক পাঁচ শতাংশের নিচে জনপ্রতিনিধি দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও ৯০ শতাংশের বেশি জনপ্রতিনিধি মানুষের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছে। মানুষকে হাসপাতালে নিয়েছে। মৃত্যুর পরে সমাধিস্থ করার ব্যবস্থা করেছে। আমরা যখন একটা লোককে শাস্তি দেব, সঙ্গে সঙ্গে আরেকজন যে ভালো কাজ করছে তাকে স্বীকৃতি দেব। তখন যাদের খারাপ মানসিকতা আছে সেখানে পরিবর্তন আসবে।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরও বলেন, পৃথিবীতে যত কার্যকরী ওষুধ আছে, সেগুলো আমরা স্প্রে করি। সেগুলোর বাইরে আমাদের কাছে জানা নেই। যেমন- বিটিআই নেই দেশে। বিটিআইটা রিকভার করেছে…। আমি তো এমন কোনো কীটনাশক স্প্রে করতে পারব না, যেটাতে মশা মারতে গিয়ে মানুষ মেরে ফেলব। আমি যদি বাতাসের মধ্যে মেরে দিই, সব কীট-পতঙ্গ মরে যাবে। তাতে মানুষেরও ক্ষতি হবে। এটা কি আমি করতে পারব? হয়ত এমন স্প্রে করে দিতে পারব যে সারা বছর আর মশা-মাছি আসবে না, কিন্তু মানুষও মরে যাবে। এ ব্যাপারে আমাদের সীমাবদ্ধ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
মন্তব্য করুন