উপকূলীয় অঞ্চলে খাবার পানির সংকট নিরসনে পাঁচ শতাধিক সৌরবিদ্যুৎ চালিত ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট (লবণাক্ত পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট) স্থাপন করবে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনে নিরাপদ পানি প্রকল্প সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সূচনা সভায় বক্তব্য দেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমাদ, মুহম্মদ হাসান খালেদ এবং মহাব্যবস্থাপক একেএম নুরুজ্জামান।
উপকূলীয় জেলাগুলোতে ৮৩টি ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে উল্লেখ করে সভায় জানানো হয় রিভার্স অসমোসিস পদ্ধতি ব্যবহার করে সাতক্ষীরা, খুলনা এবং বাগেরহাট জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে।
অ্যাডাপটেশন ফান্ডের অর্থায়নে নিরাপদ পানি প্রকল্পের আওতায় আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রকল্প এলাকায় পানীয় জলের প্রাপ্যতার হার ৩০.৩ থেক ৯৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এছাড়া, প্রকল্পের আওতায় লবণাক্ত পানির মান পরীক্ষা করা হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ মানুষ সরাসরি সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন। অতিদরিদ্র ও বন-নির্ভর পরিবার এবং প্রান্তিক গ্রামীণ সম্প্রদায়ের সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীগুলোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
ফজলুল কাদের বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সহজলভ্য উৎসের অভাবে মানুষ বাধ্য হয়ে লবণাক্ত পানি ব্যবহার করছে, যা তাদের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে। লবণাক্ত পানি ব্যবহারের কারণে পানিবাহিত রোগ, চর্মরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় পিকেএসএফ স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে ব্যবসায় উদ্যোগ মডেল অনুসরণ করে ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট স্থাপন করছে। জসীম উদ্দিন বলেন, ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর থেকেই পিকেএসএফ উপকূলীয় জেলাগুলোতে সুপেয় পানি সরবরাহ করে আসছে।
রাব্বি ছাদেক বলেন, পানির লবণাক্ততা দূর করার জন্য একটি কার্যকর প্রযুক্তি হলো রিভার্স অসমোসিস প্ল্যান্ট। এর মাধ্যমে পানির মধ্যে থাকা লবণ ও অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে পানিকে পানের উপযোগী করে তোলা হয়।
রিভার্স অসমোসিস প্রক্রিয়ায়, লবণাক্ত পানিকে একটি আধা-ভেদ্য ঝিল্লির মধ্য দিয়ে উচ্চ চাপে প্রবাহিত করা হয়। এ ঝিল্লিটি কেবল পানির অণুগুলোকে যেতে দেয়, কিন্তু লবণের কণা ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ আটকে রাখে।
মন্তব্য করুন