আমাদের মধ্যে অনেকেই চাই, ঘরটা যেন একটু প্রাণবন্ত লাগে—চোখে পড়লেই যেন শান্তি আসে, কাজের ফাঁকে একটু হালকা লাগায়। ব্যস্ততা, কাজের চাপ, শহরের কংক্রিট জঙ্গল—সব মিলিয়ে একটা ক্লান্তি আমাদের ঘিরেই থাকে। ঠিক সে সময়েই যদি ঘরের এক কোণে চোখে পড়ে একটা সবুজ গাছ—যেটা শান্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, টুকটাক পাতা ছড়িয়ে ছাড়িয়ে… শান্তি!
তবে মুশকিল হলো, সময় কই! অফিস, সংসার, ক্লাস—সারাদিন দৌড়ের ওপর থাকা মানুষের জন্য গাছের যত্ন নেওয়াটা যেন আরেকটা বাড়তি কাজ হয়ে যায়। আর রোদ? শহরের ছোট ফ্ল্যাটে তো বারান্দাও অনেকে ভাগাভাগি করে নেয়।
তাই আজ এমন কিছু গাছের কথা বলব, যেগুলো আপনার ব্যস্ত রুটিন বা কম আলো—কোনোটাই নিয়ে মাথা ঘামায় না। অল্প যত্নেই দিব্যি বাঁচে, আবার ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করে, মেজাজ ফুরফুরে করে, এমনকি দেখতেও হয় নজরকাড়া।
এই গাছগুলো শুধু ঘর সাজাবে না—একটুকরো প্রশান্তি হয়ে জায়গা করে নেবে আপনার প্রিয় কোনাটায়। চলুন, একসঙ্গে জেনে নিই এমন ৭টি সহজ-স্মার্ট ইনডোর প্ল্যান্টের কথা।
পাতাগুলো সবুজ আর সাদা রঙের, চিকন আর লম্বা—দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খুব কম যত্নে টিকে থাকে। রোদ লাগার দরকার হয় না, ঘরের এক কোণে রাখলেই হয়। এই গাছ বাতাসে থাকা ক্ষতিকর ফর্মালডিহাইড পরিষ্কার করে। NASA-র গবেষণাতেও এই গাছের নাম রয়েছে বায়ু বিশুদ্ধকারী হিসেবে। দামও বেশি না—নজর কাড়বে কিন্তু।
নামেই বোঝা যায়—শান্তির প্রতীক! সুন্দর সাদা ফুল হয় এতে, আর কম আলোতেও দিব্যি বেঁচে থাকে। পিস লিলি বাতাসে থাকা ক্ষতিকর গ্যাস ও কেমিক্যাল দূর করে। খুব বেশি যত্ন লাগে না, তাই ঘরের ড্রয়িংরুমে রেখে দিন, দেখতে ভালোও লাগবে, উপকারেও আসবে।
দেখতে ভারি স্টাইলিশ, আর যত্নও খুব বেশি লাগে না। সপ্তাহে একবার পানি দিলেই হয়। বাতাস পরিশোধনের কাজেও দারুণ। তবে এটা যদি আপনার বাসায় পোষা প্রাণী বা ছোট বাচ্চা থাকে, তাহলে একটু সাবধান—পাতা খেয়ে ফেললে সমস্যা হতে পারে।
নামটা ভয় ধরালেও, গাছটা একদমই নিরীহ। বরং নতুন ইনডোর গার্ডেনিং শুরু করতে চাইলে, এ গাছটাই সেরা। পানি বেশি দিতে হয় না—বরং কম দিলে ভালো থাকে। বেশি পানি দিলেই সমস্যা। ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে।
এই গাছ চেনেন না, এমন মানুষ খুব কমই আছেন। পানি বা মাটিতেই লাগানো যায়, ঝুলিয়ে বা জানালায় রেখে দিন। দেখতে সুন্দর আর কাটিং থেকে সহজেই নতুন গাছ তৈরি করা যায়। বাতাসে থাকা ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতেও কাজে দেয়।
হাতির কান-এর মতো বড় বড় পাতা! একটু আলো দরকার হয় এই গাছের, আর নিয়মিত পানি দিতে হয়। তবে দেখতেও বেশ দারুণ লাগে—ঘরের লিভিং রুম, ব্যালকনি বা ছাদ বাগানে রাখার জন্য উপযুক্ত।
এই গাছ তো অনেকেই ত্বক, চুল বা ছোটখাটো কাটা-পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসায় ব্যবহার করেন। অ্যালোভেরা খুব কম যত্নে টিকে থাকে। শুধু মাটি শুকালে পানি দিতে হয়। ছোট পটে রাখলেই হয়, আর অনেক উপকারেও আসে।
গাছ শুধু ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং মানসিক শান্তি দেয়। অল্প খরচে আর কম ঝামেলায় ঘর বা বারান্দা সাজানোর এক দারুণ উপায় ইনডোর প্ল্যান্ট। তাই নিজের পছন্দমতো একটা গাছ কিনে আনুন আর আপনার প্রিয় জায়গাটায় একটু সবুজ এনে দিন!
মন্তব্য করুন