জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) স্বায়ত্তশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি দূর করার পরিবর্তে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তরকে ‘মাথাব্যথায় মাথা কাটার মতো সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যায়িত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ছাপানোর উদ্যোগ এনসিটিবিকে দুর্বল করবে, তবে গুণগত কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না। তার ভাষায়, এটি মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার মতো সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, এনসিটিবি স্বায়ত্তশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি দূর করার পরিবর্তে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর কোনো কার্যকর সমাধান নয়। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিতরণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে এ ধরনের প্রশাসনিক পরিবর্তন ফলপ্রসূ হবে না। তিনি এনসিটিবির দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে বিলুপ্ত করার বিরোধিতা করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে প্রায় শূন্য থেকে শুরু করে এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পণ করা যুক্তিসঙ্গত নয়; এতে সংকট ও সমন্বয়হীনতা আরও বাড়বে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা বা মান নিয়ে প্রশ্নের দায় এককভাবে এনসিটিবির ওপর চাপিয়ে দেওয়া সমীচীন নয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরও দায়িত্ব এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, অন্তর্দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার, ও স্বায়ত্তশাসনের পথে বাধার কারণেই এনসিটিবি কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখতে পারেনি।
টিআইবি এনসিটিবির পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, প্রতিষ্ঠানটির অনিয়ম–দুর্নীতির কারণ অনুসন্ধান ও দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, সুশাসন ও জবাবদিহিতা ছাড়া বিকেন্দ্রীকরণের নামে কোনো এড–হক উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না।
মন্তব্য করুন