কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ২১১০ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে : টিআইবি 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গত ১৪ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রকল্পে প্রায় দুই হাজার ১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি বলছে, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে মোট ৮৯১টি প্রকল্পে সংঘটিত দুর্নীতির প্রাক্কলিত পরিমাণ ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, যা প্রায় ২ হাজার ১১০ কোটি টাকার বেশি। মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব, যোগসাজশ এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রকল্প অনুমোদনের প্রবণতা স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। তবু তহবিল ব্যবস্থাপক হিসেবে বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে জাতীয় তহবিলের (বিসিসিটি) কর্মকর্তারা অনিয়ম রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। টিআইবি জানায়, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশের বার্ষিক প্রয়োজন ১২,৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল মিলিয়ে বছরে গড়ে বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৮৬.২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনের মাত্র ০.৭ শতাংশ।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় তহবিল থেকে বরাদ্দ প্রতিবছর গড়ে ৮.২ শতাংশ হারে কমেছে, বিপরীতে আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে বরাদ্দ ৪৩.৮ শতাংশ হারে বেড়েছে। তবে বরাদ্দের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় এখনো অত্যন্ত সীমিত।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জাতীয় তহবিলের প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও ব্যর্থতা নিয়মিত ঘটনা। ৮৯১টি প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। গড়ে ৬৪৮ দিনের প্রকল্প শেষ হতে লেগেছে ১,৫১৫ দিন, অর্থাৎ ১৩৩ শতাংশ সময় বৃদ্ধি। কোনো কোনো চার বছর মেয়াদি প্রকল্প শেষ হতে লেগেছে ১৪ বছর পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক তহবিলেও একই চিত্র- ৫১টি প্রকল্পের মধ্যে ২১টির মেয়াদ গড়ে ৫২ শতাংশ বেড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ প্রতিবছর জলবায়ু ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০–১২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। কিন্তু ২০০৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ দেশের কাছে এসেছে মাত্র ১.২ বিলিয়ন ডলার, যা একেবারেই নগণ্য।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় তহবিলের ৫৪ শতাংশই দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই অর্থ লুটপাট করেছে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। জবাবদিহিতা, সুশাসন ও দক্ষতার অভাবের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা চাই এই অবস্থার পরিবর্তন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান মনে করেন, জলবায়ু অর্থায়নে প্রকৃত উপকারভোগীদের অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে টেকসই উন্নয়ন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইংল্যান্ডের নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে জায়গা পেলেন যারা

সৌদি আরবে বাংলাদেশির রহস্যজনক মৃত্যু

রশিতে ঝুলছিল শাকিলের দেহ, চিরকুটে কী লেখা ছিল?

ব্যর্থ হলে আর কোনো দিন নির্বাচনে আসব না : ফয়জুল করীম

অতিরিক্ত ঘুমেও লুকিয়ে আছে বিপদ

৪ জেলায় অতিভারী বৃষ্টি ও ভূমিধসের শঙ্কা

সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে যে বার্তা দিলেন মনির খান

গণহারে ভিসা বাতিলের পথে কানাডা, নেপথ্যে ভারতীয় ও বাংলাদেশিদের জালিয়াতি

জুলাইয়ে হামলায় জড়িত ঢাবির নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৪০৩ নেতা শনাক্ত

চট্টগ্রাম নিউ মার্কেট এলাকায় হকার বসার সময় নির্ধারণ করে দিলেন সিটি মেয়র

১০

নাটোর-১ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ

১১

বিএনপি নেতাকর্মীদের জনগণের আস্থা অর্জনের আহ্বান আমিনুল হকের

১২

ভীমরুলের কামড়ে প্রাণ গেল ছোট্ট শিশুর, হাসপাতালে মা

১৩

পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে বিস্ফোরণ, আহত ১২

১৪

সরকারি কর্তার জন্য ট্রেন উল্টো পথে গেল ৬ কিমি, যাত্রীদের ক্ষোভ

১৫

কক্সবাজার-৪ আসনে সড়কে কলাগাছ দিয়ে প্রতিবাদ

১৬

গ্রাহকের আস্থা ও গুণগত মানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে দুই দশকে আকিজ সিমেন্ট

১৭

খালেদা জিয়ার বিপক্ষে প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নিল এনসিপি

১৮

ঝুলে আছে ঢাকা-২০, অপেক্ষায় চার নেতা

১৯

মালয়েশিয়া পাচারের আগে উদ্ধার ২৫ নারী-শিশু, আটক ২

২০
X