

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
তবে জনমনে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়, কারা বা কাদের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়? সেই সঙ্গে তারা কী কী সুবিধা পান
রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বে থাকা এবং নীতিনির্ধারণী ও প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের সরকার বিশেষ মর্যাদা দিয়ে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে বিবেচনা করে। এ মধ্যে আছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং সমমর্যাদার অন্য ব্যক্তিরা অন্তর্ভুক্ত।
এ ছাড়া সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি করেও যে–কোনো ব্যক্তিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১-এর ২ ধারায় বলা হয়েছে—‘‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থ সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা সরকারপ্রধান এবং এই আইনের উদ্দেশ্যসমূহ পূরণকল্পে, অনুরূপ ব্যক্তি বলিয়া ঘোষিত অন্য কোনো ব্যক্তিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন।’
‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ যেভাবে ঘোষণা করা হয়
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়—প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারণ করে কারা সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন। তবে যেসব ব্যক্তি পদাধিকার বলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই মর্যাদা পান, তাদের জন্য আলাদা করে প্রজ্ঞাপন জারির প্রয়োজন হয় না।
অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যেসব সুবিধা পান
বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী আইন, ২০২১ অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এসএসএফের ওপর অর্পিত।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও আইনের ৮(২) ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, এসএসএফ বাংলাদেশে অবস্থানরত যে কোনো অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও দৈহিক নিরাপত্তা প্রদান করবে।
অর্থাৎ, কাউকে সরকার অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করলে তার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসএসএফ দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। এ জন্য তারা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে—এমন যেকোনো তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান করে এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে এসএসএফ তাকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে এবং এই ক্ষমতা দেশের সর্বত্র প্রযোজ্য। এমনকি পরিস্থিতি গুরুতর হলে ক্ষতিকর ব্যক্তিকে গুলি করার বা প্রাণঘাতী ব্যবস্থা গ্রহণের বিধানও আইনে উল্লেখ রয়েছে।
মন্তব্য করুন