২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২১ জুন) গণভবনে সুইজারল্যান্ড সফর-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ কথা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার সফরের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট : স্যোশাল জাস্টিজ ফর অল’ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারের নেতৃত্বে শ্রম খাতের সংস্কারে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে আমরা রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে গৃহীত বিভিন্ন প্রস্তুতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেছি।
তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ‘রূপকল্প ২০৪১’, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বা ফোর আই আর-এর পথে বাংলাদেশের প্রস্তুতি, মানসম্মত, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও রূপান্তরমূলক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় স্থানীয়ভাবে পরিচালিত বিভিন্ন অভিযোজন প্রয়াসের কথা তুলে ধরা হয়। এ সময় বাংলাদেশে একটি ফোর আই আর সেন্টার স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেনেভার জাতিসংঘ দপ্তরে ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’-এর মূল অধিবেশনে আমি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গৃহীত নানা উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের সরকারের নেওয়া বিভিন্ন শ্রমবান্ধব কর্মসূচি ও উদ্যোগের কথা তুলে ধরি। এ সময় আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করি যে, বিশ্বের একটি বড় শিল্পোন্নত দেশ মাত্র দুটি আইএলও মৌলিক সনদ অনুস্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ ১০টি মৌলিক সনদের মধ্যে আটটিই অনুস্বাক্ষর করেছে। আমি নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি, শিশুশ্রম নিরসন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতি হয়রানি বন্ধ, পরিবেশবান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রসার ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি। সেইসঙ্গে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক জোট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে ফলপ্রসূ করতে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করি। এ ছাড়া আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উক্তি উদ্ধৃত করে বলি যে, একমাত্র সামাজিক ন্যায়বিচারই স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি রচনা করতে পারে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে আমি রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য ইউএনএইচসিআর-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। একই সঙ্গে ভাসানচরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একাংশের সাময়িক স্থানান্তর ত্বরান্বিত করতে তাদের সহায়তা চেয়েছি। এ ছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহায়তাসহ আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তার পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করি।
মন্তব্য করুন