দেশের উত্তরাঞ্চলের চরে বসবাসকারী ১ লাখ ৪৫ হাজার পরিবারের ক্ষমতায়ন করেছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা সুইসকনট্যাক্ট পরিচালিত মেকিং মার্কেটস ওয়ার্ক ফর দ্য চরস (এমফোরসি) প্রকল্প। বাংলাদেশ সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এটি চলমান থাকবে। রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ‘চরাঞ্চলে কৃষি সম্ভাবনার উন্মোচন: কৃষি-পণ্য সংক্রান্ত সুযোগ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে জানানো হয়, ‘এমফোরসি’ প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হলো কৃষিখাতে কৃষি-পণ্য বাজারের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা, যার মাধ্যমে উচ্চ-মানের বীজ, সুনির্দিষ্টভাবে সুষম সার, এবং ফসল-রক্ষাকারী পণ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো সহজলভ্য করতে কাজ করা। নির্ভরযোগ্য এবং জলবায়ু-সহনশীল কৃষি-পণ্যগুলো সহজলভ্য করার মাধ্যমে ‘এমফোরসি’ প্রকল্পটি পরিবেশগত জটিলতার মধ্যেও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ক্ষমতায়নের চেষ্টা করছে।
সেমিনারে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এবং বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশণের এ্যাডভাইজার মো. আনোয়ার ফারুক বলেন, ‘চরাঞ্চলে কৃষি সম্ভাবনার উন্মোচন: কৃষি-পণ্য সংক্রান্ত সুযোগ সেমিনারের মতো উদ্যোগগুলো আমাদের কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চরাঞ্চলের সম্ভাবনা এবং সেখানে কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করার মাধ্যমে আমরা কৃষকদের আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গঠনে সাহায্য করতে পারব।’
পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (আরডিএ)-এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. খুরশিদ ইকবাল রিজভী বলেন, ‘চরাঞ্চলের উন্নয়নে সকল স্টেকহোল্ডারদের আগ্রহ ও প্রতিশ্রুতি দেখে আমি আনন্দিত। আজকের আলোচনাগুলো আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, একইসাথে চরবাসীদের জীবনমান আরও উন্নত করবে বলে আমি আশাবাদী।’
সুইসকনট্যাক্ট বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল (সেজান) হাসান বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কৃষি খাতে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান, কৃষি-পণ্যের বিশাল সম্ভাবনা তুলে ধরা এবং এমফোরসি, বেসরকারি খাতের কৃষি-পণ্য প্রতিষ্ঠানসমূহ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’
সেমিনারের মূল আলোচ্য বিষয়গুলো ছিল- চরাঞ্চলে কৃষি-পণ্যের বাজারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি; চরাঞ্চলে কৃষি-পণ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধির সুযোগ প্রদান; এমফোরসি, বেসরকারি খাতের কৃষি-পণ্য প্রতিষ্ঠানসমূহ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করা এবং জলবায়ু-সহনশীল কৃষি-পণ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
সেমিনারে বিশেষ উপস্থাপনা, প্যানেল আলোচনা, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং অতিথিবৃন্দের বক্তৃতা পর্ব পরিচালনা করা হয়, যেখানে দেশের চরাঞ্চলে কৃষি-পণ্যের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। প্যানেল আলোচনা পর্বটি সঞ্চালনা করেন ইনোভিশন কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ও সিইও সদরুদ্দিন ইমরান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিপিএ) চেয়ারম্যান এম. সাইদুজ্জামান; বাংলাদেশ সীড এসোসিয়েশন (বিএসএ) সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম. হুমায়ুন কবির; এবং বাংলাদেশে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ড. জিনিয়া রশিদ তাদের বক্তব্যে এই উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
বগুড়ার পল্লী উন্নয়ন একাডেমী’র (আরডিএ) মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. খুরশিদ ইকবাল রিজভী সমাপনী বক্তব্যে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন