দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দিয়েছে মালিক পক্ষ। তবে শ্রমিক পক্ষের প্রস্তাব ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা।
রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর পল্টন এলাকায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডে অনুষ্ঠিত সভায় উভয় পক্ষ এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা জমা দেয়।
এ সময় বোর্ড চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা (সিনিয়র জেলা জজ), মালিক পক্ষের প্রতিনিধি তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি এবং অন্য সদস্যরা প্রস্তাবিত বিষয়ে পর্যালোচনা করেন। পরে বোর্ডের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়।
বোর্ড চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, আজ নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভায় পূর্ব সিদ্ধান্তনুযায়ী মালিক ও শ্রমিক পক্ষ পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য মজুরি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে। মালিক পক্ষ ১০ হাজার ৪০০ টাকা এবং শ্রমিক পক্ষ থেকে ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার প্রস্তাব করেছে। এ ক্ষেত্রে তারা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। কিন্তু মালিক ও শ্রমিক পক্ষের প্রস্তাবের মধ্যে অনেক বড় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। আমি বলবো- আপনারা এই গ্যাপ (পার্থক্য) কমিয়ে আনেন। আশা করছি আগামী ১ নভেম্বর পরবর্তী সভায় বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে এবং নিম্নতম মজুরির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পৌঁছানো যাবে।
প্রস্তাবের বিষয়ে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বলেন, শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মজুরি প্রস্তাবে পার্থক্য সব সময় থাকে। আমরা এ খাতের কারখানা মালিক, মূলস্ফীতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন ও শ্রমিকদের স্বার্থ বিবেচনায় প্রস্তাব করেছি। চেয়াম্যান সাহেব বলেছেন, গ্যাপ কমানোর জন্য। নিজেদের (কারখানা মারিক) মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো। মূলত করোনা পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে পোশাক খাতের কাঁচামালসহ উৎপাদনের সব উপকরনের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ কোন পর্যন্ত গড়ায় তা অত্যান্ত চিন্তার বিষয়। যাই হোক- শ্রমিক পক্ষ চাইবে এবং মালিক পক্ষ যৌক্তিকভাবে দিতে বাধ্য থাকবে। শ্রমিক ভালো থাকলে মালিক ভালো থাকবে। বিষয়টি পরবর্তী সভা (১ নভেম্বর) চূড়ান্ত হবে এবং ডিসেম্বরের বেতন জানুয়ারিতে নতুন মজুরি কাঠামোতে হবে বলে আমি মনে করি।
শ্রমিক প্রতিনিধি বলেন, দেশের শ্রম অঞ্চল থেকে মাঠ জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তাব করা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাব অত্যান্ত যৌক্তিক। বর্তমান সময়ে এর থেকে কম খরচে শ্রমিকের একটি পরিবার চালানো সম্ভব নয়। আশা করছি সরকার ও মালিকপক্ষ আমাদের ১৩ দফা দাবিসহ প্রস্তাবিত মজুরি বাস্তাবয়নে উদ্যোগ নিবে।
মন্তব্য করুন