চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগে (এপিডি) দায়িত্ব পালনকালে সচিব পদোন্নতি পান অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মণ্ডল। এরপর দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এপিডি নিয়োগ দিতে পারেনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফলে জনপ্রশাসনের দক্ষতা ও শৃঙ্খলা নিয়ে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই পদে নিয়োগ দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আর কতদিন সময় নেবে তা নিয়ে কর্মকর্তাদের কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তবে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন এপিডি নিয়োগ হওয়ার জোরাল সম্ভাবনা রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, জপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ এপিডি। এ পদে বসার দৌড়ে এতদিন রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিদুল ইসলামের নাম শোনা গেছে। তারা দু’জনই বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। কিন্তু গত কয়েকদিন তাদের দু’জনের মধ্যে হাবিবের নাম শোনা যাচ্ছে না। মুহিদুলের সম্ভাবনা এখনও রয়েছে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। নতুন করে আরেকজনের নাম যুক্ত হয়েছে। তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ মিশনে মিনিস্টার ( লেবার) পদে কর্মরত নাজমুস সা’দত সেলিম। তিনিও বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। সেলিমই পরবর্তী এপিডি হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছেন বলে মনে করছেন কর্মকর্তাদের অনেকে। চলতি সপ্তাহের যে কোনো সময় তাকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে।
সূত্র জানায়, বিভাগীয় কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করছেন এমন কাউকে মন্ত্রণালয়ে আনতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী। ফলে বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান এপিডি পদে দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে হয় মুহিদুল ইসলাম অথবা নাজমুস সা’দত সেলিম হতে পারেন পরবর্তী এপিডি। তাদের মধ্যে নাজমুস সা’দত সেলিমের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ৫ সেপ্টেম্বর সচিব পদোন্নতির পরও প্রায় দুই মাস এপিডির দায়িত্বে ছিলেন আব্দুস সবুর মণ্ডল। পরে ২৬ অক্টোবর তাকে ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান ( সচিব) পদে নিয়োগ দেয় সরকার। তারপর থেকে এপিডি পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নবীরুল ইসলাম। দ্রুত এপিডি পদে কাউকে নিয়োগ দিয়ে তাকে নবীরুলকে ভারমুক্ত করার কথা বলছেন কেউ কেউ।
প্রশাসনে গুঞ্জন রয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার ঠেলাঠেলির কারণেই এপিডি পদে নিয়োগে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে কারা এই ঠেলাঠেলিতে জড়িত তা বলছেন না কর্মকর্তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এপিডি নিয়োগ নিয়ে গত কয়েক দিন আগে কালবেলাকে বলেছিলেন, আমরা খুব দ্রুত এপিডি নিয়োগ দেব। বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে। গত সোমবার তার বক্তব্যের জন্য ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকেও ফোন করা হয়েছে। তিনিও ফোন ধরেননি।
মন্তব্য করুন