সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে তদন্ত অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। একই সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সিপিজে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) নিউইয়র্ক থেকে একটি বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। এতে বলা হয়েছে, ১৩ মে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল অধরা ইয়াসমিন ও আরটিভিতে প্রচারিত ভিডিও রিপোর্টের সূত্রের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ নিবন্ধিত হয়। ৩০ এপ্রিল প্রচারিত ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে রাজারবাগ দরবার শরিফের একজন নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধের অভিযোগ ফুটিয়ে তোলা হয়। এ বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। প্রতিশোধ নেওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তি এসব জানিয়েছেন সিপিজেকে। অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে শাকেরুল কবির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ওদিকে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে অধরা ইয়াসমিন রিপোর্ট করেছেন, শাকেরুল কবিরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল এবং নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ আছে।
সিপিজে লিখেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হয় ২০১৮ সালে। তারপর থেকে বাংলাদেশে সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঘন ঘন এই আইনটি ব্যবহার করা হয়েছে।
এ আইনে বিভিন্নভাবে অনলাইনে মতপ্রকাশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এ বছর মার্চে প্রথম আলো পত্রিকার একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। এই আইনে শীর্ষ স্থানীয় এই পত্রিকারটির প্রধান ও স্টাফের বিরুদ্ধে নানামুখী তদন্ত শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের প্রধান ভোলকার তুর্ক পুনর্বার কর্তৃপক্ষের প্রতি এই আইনে অবিলম্বে শিথিলতা আনতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। এই আইনটি স্থগিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে সিপিজে ও অন্য মানবাধিকারবিষয়ক গ্রুপগুলো।
সিপিজের প্রোগ্রাম পরিচালক কার্লোস মার্টিনেজ ডা লা শেরনা বলেছেন, রিপোর্টিংয়ের কারণে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে তদন্ত করার টার্গেট নিয়েছে। এটা আতঙ্কজনক।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অবিলম্বে তাদের তদন্ত বন্ধ করতে হবে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, দায়িত্ব পালনের জন্য ইয়াসমিনকে আরও প্রতিশোধের মুখ পড়তে হবে না।
এই মামলার বিষয় অধরা ইয়াসমিন জানতে পারেন ৮ জুলাই। ওইদিন স্থানীয় পুলিশ স্টেশন থেকে ফোনে তাকে জানানো হয়। পরের দিন তিনি জানতে পারেন, নোয়াখালীতে সিআইডিতে ১৪ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সমন পাঠানো হয়েছে। ইয়াসমিনের ভিডিওতে সূত্র হিসেবে যিনি কাজ করেছিলেন, তাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর আগেও রাজারবাগ দরবার শরিফ ভূমি দখলের জন্য সুবিধা পেতে বানোয়াট মামলা করেছিল বলে অভিযোগ আছে।
মন্তব্য করুন