কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ডা. জাফরুল্লাহর স্মরণসভায় বক্তারা

জাতির ক্রান্তিলগ্নে ডা. জাফরুল্লাহর মতো দেশপ্রেমিক বড় প্রয়োজন ছিল

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় বক্তারা। ছবি : কালবেলা

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সংগঠনের নেতারা বলেছেন, দেশ ও জাতি এখন বড় দুঃসময় ও কঠিন সময় পার করছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ডা. জাফরুল্লাহর মতো দেশপ্রেমিক, আজীবন মুক্তিযোদ্ধার বড় প্রয়োজন ছিল।

শনিবার (৮ এপ্রিল) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মরহুম ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। রজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ স্মরণসভার আয়োজন করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণসভা আয়োজন কমিটি।

সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী পুরো জাতির অভিভাবক ছিলেন। আজীবন বিপ্লবী মানুষ ছিলেন। নিজের জীবনে কখনো তিনি ‘না’ বলতে শিখেননি। তার জীবনে কখনো পরাজিতবোধ ছিল না। আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন সমাজকে পরিবর্তনের জন্য, মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য।

তিনি বলেন, এখন দেশ ও জাতি বড় দুঃসময় পার করছে, কঠিন সময় পার করছে। দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অঙ্গনে ভয়াবহরকম আক্রমণ চলছে। নিগৃত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে এ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ। এই দুঃশাসনের অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য হাত-পা ছুঁড়ছি। যারা রাজনীতি করি, রাজনৈতিক কর্মী আছি তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। নির্বিচারে নির্যাতিত হচ্ছি, অনেকে জীবন দিচ্ছেন, প্রাণ দিচ্ছেন। তারপরও এই দানবকে সরানো যাচ্ছে না। এটা বাস্তবতা। এর জন্য সকল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। সবাইকে এক হয়ে সোচ্চার হয়ে শুধু রাজপথে নয়, সোচ্চার কণ্ঠে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ঝাঁকি দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন,

ভয়াবহ শাসনের মধ্যে পড়েছে দেশ। অবলীলায় হত্যা করা হয়, গুম করা হয় এখানে। বিচার ব্যবস্থা, জনগণের ভোটাধিকার ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা হয়েছে। সব মানুষকে দাসানুদাসে পরিণত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লেশমাত্র নেই এখানে। সেই চেতনাকে ফিরিয়ে আনতে হলে নতুন করে সবাইকে চিন্তা করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ডা. জাফরুল্লাহর প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার জীবনে চারটি বিষয়ে মূলত কাজ করেছেন। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় যেখানে সাধারণ মানুষ সর্বসান্ত হয়ে রাস্তায় বসে পড়তেন সেখানে তিনি মনোযোগী ছিলেন। নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি নারীর সম্মান নিয়ে সচেতন ছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিষয়ে তিনি সবসময়ে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন। এছাড়া দেশের সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি দিনের পর দিন দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত তার পদচারণা ছিল। ডা. জাফরুল্লাহর পূর্ণ জীবনে কোনো বিচ্যুতি হয়নি তবে তার অনেক আকাঙ্ক্ষাও পূরণ হয়নি।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কার্যকরী কৌশলী জোয়ার দরকার। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই জোয়ার সৃষ্টি করলে দেশ এগিয়ে যাবে।

সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অকুতোভয় ডা. জাফরুল্লাহকে দেশের জন্য প্রয়োজন ছিল। তিনি সত্য ও দেশের পক্ষে ছিলেন। মানুষের মুক্তির জন্য আজীবন লড়াই করে গেছেন। দেশে মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধার বাইরে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।

সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, মায়ের ডাকের সভাপতি সানজিদা ইসলাম, সুজনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক এ জে ড এম জাহিদ হোসেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, বেলার অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজাওয়ানা হাসান, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবদুল হক, বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী সারা হোসেন, ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কন্যা বৃষ্টি চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জিএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান প্রমুখ।

সভা পরিচালনা করেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতা জুলহাস নাহিহান বাবু, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান। অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ও মানবাধিকারের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঝালকাঠিতে আ.লীগের তিন নেতা বহিষ্কার

ব্রিটিশ স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন জগবন্ধু ঠাকুরবাড়ি

চট্টগ্রামে আইআইইউসির বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা আ.লীগের দোসর : সেলিম ভূঁইয়া

চাল বিতরণ নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১৫

ভোলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ৩০

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৪

ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা

হঠাৎ কেন বাড়ছে ট্রেন দুর্ঘটনা?

দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবজি বিক্রেতা খুন

১০

উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিলেও প্রার্থীদের সমর্থন জানাবে বিএসপি

১১

সকাল ৯টার মধ্যে ঝড়ের শঙ্কা

১২

সিএনজি ও অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ১

১৩

বাবার ইচ্ছে পূরণে হেলিকপ্টার উড়িয়ে কনের বাড়িতে বর

১৪

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ল রং-বেরঙের ঘুড়ি

১৫

যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম ইসরায়েলের

১৬

বাবার কোলে চিরনিদ্রায় সেই পেট জোড়া লাগানো জমজ শিশু

১৭

‘চাঁদপুরের ইলিশ বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করে তাই আমিও পছন্দ করি’

১৮

ভুয়া নিয়োগপত্রে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন শিবলু, অতঃপর...

১৯

গাজায় ‘জয়ী’ হতে না পেরে অন্যত্র দৃষ্টি ইসরায়েলের

২০
*/ ?>
X