কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ১১:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম ইসরায়েলের

ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজার বসতি। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত গাজার বসতি। ছবি : সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল। দুই দলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য হামাসকে এক সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে ইসরায়েল। শনিবার (০৩ মে) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তিতে সম্মত হতে সময় বেধে দিয়েছে ইসরায়েল। এ সময়ের মধ্যে চুক্তিতে সম্মত না হলে রাফায় হামলা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে তারা।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আল্টিমেটামের কথা জানালেও কবে এটি দেওয়া হয়েছে তা জানানো হয়নি। প্রতিবেদনে মিসরের এক কর্মকর্তার শুক্রবারের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, আগামী শুক্রবার পর্যন্ত ইসরায়েল সময় বেধে দিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত হামাসের নেতাদের হাতে এ প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধবিরতির এ প্রস্তাব তৈরি করেছে মিসর।

সাম্প্রতিক চুক্তির একটি খসড়া লেবাননের সংবাদমাধ্যম আল মায়েদিনের হাতে এসেছে। খসড়াটি জনসম্মুখে তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যমটি।

মূলত ৩টি ধাপে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে খসড়া প্রস্তাবে। খসড়া প্রস্তাবে কেবল বন্দি বা জিম্মি বিনিময়ের কথাই উল্লেখ করা হয়নি, গাজাসহ এই অঞ্চলে একটি শান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। আল মায়েদিনের প্রতিবেদন অনুসারে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার পূর্বাংশে সরে যাবে এবং ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের দখল করা সীমান্তে চলে যাবে।

খসড়াতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির শুরুতে দৈনিক অন্তত আট ঘণ্টা ইসরায়েলি যুদ্ধ বা পরিবহন কোনো বিমানই গাজার আকাশসীমায় আসবে না। আর যেদিন যেদিন বন্দি-জিম্মি বিনিময় হবে, সে দিন গাজায় অন্তত ১০ ঘণ্টা আগে থেকে কোনো ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান উড়বে না।

যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিনে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা মধ্যাঞ্চল দিয়ে চলে যাওয়া সালাহউদ্দিন স্ট্রিটের সমান্তরালে থাকা আল রশিদ স্ট্রিট থেকে সরে গিয়ে আরও পূর্ব দিকে ওঠে যাবে। একই সময়ে গাজায় মানবিক ত্রাণসহায়তা চালু এবং বেসামরিক গাজাবাসী তাদের নিজ বাড়িতে ফেরা শুরু করবে।

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির ২২ দিনের মধ্যে হামাসের হাতে জিম্মি এক-তৃতীয়াংশ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং এই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী সেন্ট্রাল গাজা থেকে সরে গিয়ে গাজা-ইসরায়েল বিভক্তকারী সীমানায় চলে যাবে। এই সময়েও বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী নিজ বাড়িতে ফিরতে থাকবে। এ ছাড়া, যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপেই গাজায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও জ্বালানি প্রবেশ করতে থাকবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামাস এখন পর্যন্ত জীবিত থাকা ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। একজন জিম্মির বিপরীতে ২০ জন করে ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনি নারী বা শিশু মুক্তি পাবে এবং এই মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েল আর কখনোই গ্রেপ্তার করবে না, সেই নিশ্চয়তাও দিতে হবে।

তবে হামাসের হাতে জিম্মি প্রত্যেক ইসরায়েলি নারী সেনার বিপরীতে ইসরায়েলকে ৪০ জন করে ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে। খসড়া প্রস্তাব অনুসারে, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং প্রতি তিন দিন পরপর হামাস তিনজন করে মুক্তি দেবে।

এ ছাড়া, যুদ্ধবিরতির ১৪তম দিনে যুদ্ধাহত হামাস সেনাসহ অন্য সশস্ত্র সদস্যদের রাফাহ হয়ে মিসরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে উন্নত চিকিৎসার জন্য। প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে হামাস ও ইসরায়েল পরোক্ষ আলোচনা শুরু করবে যাতে এই অঞ্চলকে শান্ত রাখা যায়। প্রথম ধাপের প্রতিটি পর্যায়ে জাতিসংঘ ও এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংগঠনসহ সবাই গাজা উপত্যকায় বিপুল পরিমাণ ত্রাণসহায়তা নিশ্চিত করবে।

প্রস্তাবিত খসড়া অনুসারে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপেই গাজার বিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনরায় গড়ে তুলতে কার্যক্রম শুরু হবে। এ লক্ষ্যে একটি সমন্বয়কারী কমিটি গঠিত হবে, যা ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স ফোর্সকে প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। এ ছাড়া, বাস্তুচ্যুতদের জন্য অস্থায়ী আবাস গড়ার কথাও বলা হয়েছে খসড়ায়।

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ বিস্তৃত হবে ৪২ দিন। সেখানে উভয় পক্ষই একটি স্থায়ী স্থিতাবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সাধারণ ভিত্তিকে একমত হবে। তবে এই ধাপে মূলত, স্থিতাবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি বিধ্বস্ত গাজা গড়ে তোলার তুলনামূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আয়োজন নিশ্চিত করা হবে।

তৃতীয় ধাপও বিস্তৃত হবে ৪২ দিন। এই ধাপে উভয় পক্ষের হাতে থাকা নিহত যোদ্ধা বা সেনাদের মরদেহ বিনিময় করা হবে। গাজা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োগ শুরু করা হবে। এই সময় থেকেই ফিলিস্তিনি পক্ষগুলো (হামাসসহ অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো) গাজায় কোনো সামরিক অবকাঠামো গড়ে তোলা থেকে বিরত থাকবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তিস্তার পানির তোড়ে ভেঙে যেতে পারে ফ্লাইড বাইপাস সড়কটি

বজ্রপাতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের পাশে রয়েছে : নীরব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

ছক্কার ঝড় তুলে ম্যাচসেরা সাইফের মুখে আত্মবিশ্বাসের কথা

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

১০

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

১১

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

১২

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

১৩

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

১৪

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

১৫

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৬

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১৭

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১৮

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৯

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

২০
X