প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বাজেট প্রকল্পের আওতায় পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রম ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট গ্লোবাল নিউট্রিশন ইনিশিয়েটিভ এবং আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় মা এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য টেকসই পুষ্টি নিশ্চিতকরণ’ পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এবং দি হাঙ্গার প্রজেক্টের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশান-২ এ হোটেল অ্যারিস্ট্রোক্র্যাটে এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
দি হাঙ্গার প্রজেক্টের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ গোলাম নবী সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ডা. শাহ গোলাম নবী বলেন, এই প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দি হাঙ্গার প্রজেক্টকে অভিনন্দন জানাই। সরকারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়ে এই প্রকল্পটি করা হবে। ভবিষ্যতে এই প্রকল্পটি আরও বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, মায়েদের নিয়ে অনেক কাজ করার আছে। নইলে কোনো উন্নয়ন টেকসই হবে না। দি হাঙ্গার প্রজক্টের এই প্রকল্পটি একটি সুন্দর উদ্যোগ। প্রকল্পটি আরও বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া দরকার।
অন্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. মো. আক্তারুজ্জামান, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের পরিচালক (কর্মসূচি) নাছিমা আক্তার জলি, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সহকারী পরিচালক জমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
এ ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জাতীয় পুষ্টি সেবা, উপজেলা স্বাস্থ্য অফিস এবং বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তারা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
নাছিমা আক্তার জলি বলেন, বাংলাদেশের নারী ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতের লক্ষ্যে আজকে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হচ্ছে। বাংলাদেশে শিশু ও নারী মৃত্যুর হারের দিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে আছে। কিন্তু নারী ও শিশুর শারীরিক এবং মানসিক পরিগঠনের জন্য পুষ্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা আমরা খুব একটা নজর দেই না। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে নারী ও শিশুর পুষ্টি নিয়ে আমরা কাজটি করব। আমাদের আগামী প্রজন্মকে সবল ও সক্ষম জাতি হিসেবে পরিণত করতে এই প্রকল্প ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।
ডা. মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, নারী ও শিশুর পুষ্টিমান উন্নয়নের অনেক প্রচেষ্টা চলছে। সরকার কাজ করছে, বেসরকারি সংস্থাগুলোও কাজ করছে। জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে, আবার কিছু কিছু সূচকে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। করণীয় আছে অনেক। আশা করি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ও শিশুর পুষ্টি মানের উন্নয়ন ঘটবে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ৩০ বছর আগে পুষ্টিবিষয়ক কার্যক্রম দিয়েই আমি আমার উন্নয়নবিষয়ক কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। দি হাঙ্গার প্রজেক্ট অনেক দিন ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে। আমরা হাঙ্গার প্রজেক্টের মাধ্যমে পুষ্টি, স্বাস্থ্যবিষয়ক নিয়মনীতি মানার ক্ষেত্রে মানুষের অভ্যাস ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের একটা সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।
‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট গ্লোবাল নিউট্রিশন ইনিশিয়েটিভ এবং আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় মা এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য টেকসই পুষ্টি নিশ্চিতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার ২টি ইউনিয়নে মার্চ ২০২৩ থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করেছে।
খুলনা ছাড়াও রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি ফেব্রুয়ারি ২০২৮ পর্যন্ত পরিচালিত হবে।
প্রকল্পটি নিম্নোক্ত তিনটি ক্ষেত্রে কাজ করবে- গর্ভবতী মা ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ভিটামিন সম্পূরক উপাদানযুক্ত অণুপুষ্টি প্রদান, সাতটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি আচরণ ত্বরান্বিতকরণ; পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন অবস্থার কৌশলগত উন্নয়ন।
মন্তব্য করুন