প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মিয়ানমার ভূমিকম্প :  বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা ও আগাম সতর্কবার্তা

প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি : সংগৃহীত
প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি : সংগৃহীত

ভূমিকা

২৮ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার, স্থানীয় সময় দুপুর ১২:২০। মিয়ানমারসহ আশপাশের দেশগুলো কেঁপে উঠে মিয়ানমারের মান্ডালের অন্তর্গত জাগাইং শহরে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে। এতে অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছেন এবং অসংখ্য স্থাপনা ধসে পড়েছে। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পের পর মিয়ানমারে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে। ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্ডালে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে থাইল্যান্ডে কম্পন অনুভূত হয়, ক্ষয়ক্ষতি হয়। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে সবচেয়ে বেমি আলোচিত হচ্ছে ৩০ তলা নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়া নিয়ে।

ভূমিকম্পের উৎস, ক্ষয়ক্ষতি, কোথায়, কেন হলো এবং এতে বাংলাদেশের জন্য কি কি শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে তা নিয়ে এই প্রবন্ধ।

ভূমিকম্পটির উৎস, মাত্রা এবং বৈশিষ্ট্য

ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল মান্ডালের জাগাইং হলেও এটি মান্ডালে থেকে টাউঙ্গু পর্যন্ত বিস্তৃত উত্তর-দক্ষিণ বরাবর একটি স্লিপ ফল্ট লাইনের দুই পাশে দুই প্লেটের নড়াচড়ার কারণে সংঘটিত হয়েছে। পৃথিবীর উপরের স্তরটি বিভিন্ন অংশে বিভক্ত, যাকে বলা হয় টেকটোনিক প্লেট, যেগুলো সবই ক্রমাগত নড়াচড়া করছে। কিছু একে অপরের পাশাপাশি নড়াচড়া করে, আবার কিছু একে অপরের উপরে বা নিচে পরস্পরের দিকে সরতে চায়। এই গতিবিধিই ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি করে।

মিয়ানমারকে বিশ্বের ভূতাত্ত্বিকভাবে ‘সক্রিয়’ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ এটি চারটি টেকটোনিক প্লেট - ইউরেশিয়ান প্লেট, ভারতীয় প্লেট, সুন্দা প্লেট এবং বার্মা মাইক্রোপ্লেটের অভিসরণস্থলের উপরে অবস্থিত। ৪০-৫০ মিলিয়ন বছর আগে ইউরেশিয়ান প্লেটের সঙ্গে ভারতীয় প্লেটের সংঘর্ষের ফলে হিমালয় পর্বতমালার সৃষ্টি হয়েছে। বার্মা মাইক্রোপ্লেটের নিচে ভারতীয় প্লেট সরে যাওয়ার ফলে ২০০৪ সালে সুনামি সৃষ্টি হয়েছিল।

জাগাইং ফল্ট নামে একটি বড় ফল্ট রয়েছে, যা মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিস্তৃত এবং ১,২০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ। শুক্রবারের ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পের কারণ ছিল ‘স্ট্রাইক-স্লিপ’-যেখানে দুটি প্লেট একে অপরের সঙ্গে সমান্তরালে এবং অনুভূমিকভাবে কিন্তু বিপরীত দিকে সরে যায়। প্লেটগুলো একে অপরের পাশ দিয়ে সরে যাওয়ার সময় ঘর্ষণ শক্তির কারণে আটকে যায়। ঘর্ষণ শক্তির সীমা যখন অতিক্রম করে যায় তখন হঠাৎ ছেড়ে দেয় এবং প্লেট দুটি হঠাৎ সরে যায়, যার ফলে ভূমিকম্প হয়।

চিত্র: টেকটোনিক ম্যাপ, ফল্টলাইন এবং মান্ডালে ভূমিকম্পের কেন্দ্র (সূত্র : USGG and BBC)

ভূমিকম্প এত দূরে কেন অনুভূত হয়েছিল?

ভূপৃষ্ঠের ৭০০ কিলোমিটার নিচ পর্যন্ত ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হতে পারে। মান্ডালে ভূমিকম্প ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার নিচে ছিল, এ রকম অগভীর ভূমিকম্পে ভূপৃষ্ঠে কম্পনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়। ভূমিকম্পটিও বড় ছিল– রিখটার স্কেলে ৭.৭ মাত্রার। পরাঘাত ছিল ১২ মিনিট পর ৬.৭ মাত্রার। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, প্রধান কম্পনটি ছিল হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও বেশি শক্তিশালী। উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত ২০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ ফল্ট লাইন বরাবর এই ভূমিকম্প হওয়ার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উত্তর-দক্ষিণ বরাবর অধিক অঞ্চলে বিস্তৃত হয়। এই ফল্ট লাইনটি দক্ষিণে মাটির নিচে থাইল্যান্ডের দিকে ১২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত যার কারণে মিয়ানমারের পরে থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।

ভূপৃষ্ঠে ভূমিকম্প কত মাত্রায় আঘাত করবে তা মাটির ধরণ দ্বারাও নির্ধারিত হয়। ব্যাংককের মাটি নরম কাদা যেখানে ভূমিকম্পের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এটাকে ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় অ্যামপ্লিফিকেশন (amplification) বলে। তাই ব্যাংককের ভূতত্ত্বগত গঠন ভূমিকম্পের মাত্রা বৃদ্ধি করেছে।

সারমর্ম হলো, ফল্ট লাইনের বিস্তৃতি এবং নরম কাদামাটির স্তরের কারণে দূরে হওয়ার পরেও থাইল্যান্ডে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাংকক থেকে কাছে হলেও প্লেটের সরনের দিকের সঙ্গে বাংলাদেশের দিক ছিল ৯০ ডিগ্রি। যার কারণে কম্পন অনুভূত হলেও মাত্রা কম ছিল বাংলাদেশে।

ব্যাংককে কেন কেবল একটি আকাশচুম্বী ভবন ধসে পড়ল?

ভূমিকম্পের সময় ব্যাংককের উঁচু ভবনগুলো দুলছে, বিভিন্ন ভবনের ছাদের পুল থেকে পানি পড়ছে – এ রকম ভিডিও ফুটেজ দেখা গেছে বিভিন্ন মিডিয়ায়। তবে ব্যাংককের চাতুহাক জেলার অডিটর-জেনারেলের অফিসের নির্মাণাধীন সদর দপ্তরটিই ধসে পড়া একমাত্র আকাশচুম্বী ভবন বলে মনে হচ্ছে - এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী। এখানে বলে রাখা ভালো যে, সাধারণত আকাশচুম্বী ভবনগুলো ভূমিকম্পে ধসে পড়ার আশঙ্কা কম। কারণগুলো হলো, (১) এসব ভবন অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা ডিজাইন করা হয় (২) কনট্রাক্টর নিয়োগ দেওয়া হয় অভিজ্ঞতা এবং সক্ষমতা যাচাই করে নামিদামি প্রতিষ্ঠানকে (৩) ভূমিকম্পের ফ্রিকোয়েন্সি এবং ভবনের ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে পার্থক্য বেশি থাকার কারণে অনুনাদ (resonance) হয় না (৪) বেশিরভাগ আকাশচুম্বী ভবন তুলনামূলকভাবে নতুন, ফলে বয়সের কারণে ম্যাটেরিয়ালের মান কমে যাওয়ার ঝুঁকি কম।

থাইল্যান্ডের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক আমর্ন পিমার্নমাস বলেন, ভূমিকম্পসহনীয় ভবনের বিষয়ে ৪৩টি প্রদেশে নিয়মকানুন থাকলেও, ১০% এরও কম ভবন ভূমিকম্পসহনীয় বলে অনুমান করা হয়। কিন্তু, যে ভবনটি ধসে পড়েছে তা ভূমিকম্পের সময় নির্মাণাধীন ছিল এবং হালনাগাদ বিল্ডিং কোড মেনে ডিজাইন করার কথা, যা তদন্তের পর জানা যাবে।

ড. পিমার্নমাস বলেন, ব্যাংককের নরম মাটিও এর পতনের পেছনে ভূমিকা পালন করতে পারে, কারণ এটি ভূমিকম্পের মাত্রা তিন থেকে চারগুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। কিন্তু এই কারণটি আমার কাছে যুক্তিতে টিকে না, কারণ তাহলে আশপাশের অনেক ভবন ধসে পড়ার কথা, তা হয়নি। অ্যামপ্লিফিকেশন হয়েছে অবশ্যই, তাই তো সবাই তীব্র কম্পন অনুভব করেছে। তারপরও ব্যাংককে কম্পনের মাত্রা ৩-৪ এর মধ্যে ছিল। তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য কারণও থাকতে পারে, যেমন কংক্রিটের গুণগতমান এবং কাঠামোগত ব্যবস্থায় কোনো ডিজাইনের ত্রুটি। এগুলো এখনও বিস্তারিতভাবে তদন্ত করা বাকি।’ এটার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। চায়না অবজারভারের ভিডিও দেখে বুঝতে পারলাম, ভবন নির্মাণ হচ্ছিল প্রিকাস্ট স্ল্যাব দিয়ে। অর্থাৎ, কলাম (পিলার), বিম, কনক্রিটের শিয়ার ওয়ালের কোর নির্মাণের পর প্রিকাস্ট স্ল্যাব অন্যত্র ঢালাই করে ক্রেন দিয়ে চার বিমের মাঝখানে বসিয়ে দেয়া হয়। ফাঁপা কোর স্ল্যাবগুলোকে বিমের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সঠিক লোড ট্রান্সফার এবং কাঠামোগত অখণ্ডতা নিশ্চিত করা একান্ত আবশ্যক, যা অতিরিক্ত সংযোগ রড, শিয়ার কানেক্টর এবং প্রিকাস্ট স্ল্যাবের ওপর রডসহ কংক্রিট ঢালাই – ইত্যাদি পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জন করা হয়। ভবনটির মেইন স্ট্রাকচার সম্পন্ন হওয়ার পরেও মোট কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩০% নির্দেশ করে ভবনটির প্রিকাস্ট স্ল্যাবগুলোকে মেইন স্ট্রাকচারের সঙ্গে যথাযথভাবে সংযোগ করার কাজটি হয়ত সম্পন হয়নি। যার কারণে, স্ল্যাবগুলো শুধু বোঝা হিসেবে কাজ করেছে, ভূমিকম্পের লোড সবগুলো কলাম এবং শিয়ার ওয়ালে ট্রান্সফারের কাজটি করতে পারেনি।

পুরো ভবনের ভূমিকম্পের আগের ছবিতে আরেকটা বিষয় লক্ষণীয় ছিল, ভবনের নিচে ডাবল বা ট্রিপল উচ্চতার কিছু কলাম যা ভূমিকম্পে ধ্বসে পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হাইওয়ে থেকে ধারণ করা বিবিসির ওয়েবসাইটে প্রচারিত একটি ভিডিওতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল ভবনের নিচ তলার সকল কলাম এবং শিয়ার ওয়াল একসঙ্গে ফেইল করার কারণে পুরো ভবন একসঙ্গে সোজা নিচে ধসে পড়ে। একপাশে কয়েকটা কলাম ফেইল করলে ধসের ধরনটা অন্যরকম হতো।

চীনে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধসে পড়া ভবনটি একটি কোর টিউব এবং ফ্ল্যাট স্ল্যাব সিস্টেম দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছিল। কোরটি স্লিপফর্ম কাস্টিং ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল, যখন ফ্ল্যাট স্ল্যাবগুলো একটি উত্তোলন পদ্ধতি ব্যবহার করে ইনস্টল করা হয়েছিল। অতিরিক্ত উচ্চতায় কংক্রিটের মান নিশ্চিত করার জন্য বহিরাগত কাঠামোতে একটি ক্লাইম্বিং ফর্মওয়ার্ক সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল। এটা যদি সত্য হয়, তাহলে বলতে হবে, এটা একটা বড় ধরনের ডিজাইন ত্রুটি এই ধরনের আকাশচুম্বী ভবনের ক্ষেত্রে।

সবকিছু মেলালে এটা পরিষ্কার হয় যে, তড়িঘড়ি করে ভবনটির মেইন স্ট্রাকচারটি সম্পন্ন করে প্রিকাস্ট স্ল্যাবগুলোকে মেইন স্ট্রাকচারের সঙ্গে যথাযথভাবে সংযোগ না করার কারণে ভবনটি ধসে পড়ার মূল কারণ বলে প্রতীয়মান হয়। তার সঙ্গে যোগ হতে পারে, ডিজাইন ত্রুটি, নির্মাণ ত্রুটি, কনক্রিটের গুণগতমান এবং রডের অযথাযত সাজানো।

বাংলাদেশের রাজধানীর প্রথম ঢাকা এলেভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কন্ট্রাকটর হলো ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইটিডি), চীনের শানডং হাই-স্পিড গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এসডিএইচএস) এবং পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অফ চায়না (সিনোহাইড্রো) এর জয়েন্ট ভেঞ্চার। ৩০ তলা ভবনের কন্ট্রাক্টর ছিল ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইটিডি) এবং চায়না রেলওয়ে নাম্বার টেন লিমিটেডের জয়েন্ট ভেঞ্চার। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ডিজাইন ভূমিকম্পসহনীয় কিনা যাচাই করে দেখা উচিত বলে আমি মনে করি। স্ট্রাকচারটা দেখে ডিজাইন যথার্থ কিনা সন্দেহ তৈরি হয়।

চিত্র : নির্মাণাধীন ৩০ তলা অডিটর জেনারেল ভবন : ভূমিকম্পের আগে (বাঁয়ে), ভূমিকম্পের পরে ভাঙার সময় (ডানে)। (সূত্র : ইন্টারনেট)

বাংলাদেশে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা কতটুকু?

বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী গবেষণা রিপোর্টগুলো স্টাডি করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া বড় প্লেট বাউন্ডারিগুলো, বাংলাদেশের ভেতরে এবং অতিনিকটের ফল্ট লাইনগুলোর কারণে ১০০ থেকে ১৫০ বছর অন্তর ৭ এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। ৮ এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে যা ২৫০ - ১০০০ বছর পর পর ফিরে আসে। বাংলাদেশের মধ্যে ও আশপাশে ৭ এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্পগুলো ছিল :

১. কাচার ভূমিকম্প (১৮৬৯) : কেন্দ্র ছিল সিলেটের সিলচরে, মাত্রা ৭.৪ ।

২. বেঙ্গল ভূমিকম্প (১৮৮৫) : কেন্দ্র ছিল মানিকগঞ্জে, মাত্রা ৭.০।

৩. শ্রিমঙ্গল ভূমিকম্প (১৯১৮) : কেন্দ্র শ্রিমঙ্গল, মৌলভিবাজার। মাত্রা ৭.৬।

৪. মেঘালয় ভূমিকম্প (১৯২৩) : মাত্রা ৭.১।

৫. ধুবড়ি ভূমিকম্প (১৯৩০) : কেন্দ্র ধুবড়ি, আসাম, ভারত। মাত্রা ৭.১।

বাংলাদেশ ও এর আশপাশে বড় ভূমিকম্পের মধ্যে আছে ১৭৬২ সালের গ্রেট আরাকান ভূমিকম্প যার মাত্রা ছিল ৮.৫। এরপর ১৮৯৭ সালে আসামে সংঘটিত হয়েছিল ৮.০/৮.৭ মাত্রার গ্রেট ইন্ডিয়ান ভূমিকম্প যার কেন্দ্র শিলং, ভারত। আসামে ১৯৫০ সালে সংঘটিত হয় আরেকটি ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প।

এসব অতীত ভূমিকম্পগুলো নির্দেশ করে বাংলাদেশে এবং এর আশপাশের অতি নিকটে ৭ এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্প আসন্ন কারণ বিগত ১০০ বছরের মধ্যে এ মাত্রার ভূমিকম্প হয়নি। এখনও হতে পারে আবার ১০-২০ বছর পরও হতে পারে। তবে, এটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ৮ এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হয়ত আরও ৫০-২০০ বছর পরে হতে পারে।

ভূমিকম্প হলে বাংলাদেশের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হবে

রানা প্লাজা ধ্বসের পরে বিদেশি ক্রেতাদের চাপে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ভবনগুলো নিরাপদ কি না যাচাই করা হয়। তাতে দেখা গেছে, অধিকাংশ ভবন ডিজাইন এবং নির্মাণ ত্রুটির কারণে ব্যয়বহুল মেরামত এবং শক্তিবৃদ্ধিকরণ করতে হয়েছে, তাতে অনেক মালিক লোকসানে পড়েছে, ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়েছে অথবা অতিরিক্ত মূলধন জোগান দিতে হয়েছে।

ঢাকা শহর এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের লোনে রাজউকের তত্ত্বাবধানে বিদেশি এবং দেশি পরামর্শকদের দ্বারা আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (URP=Urban Resilience Project=নগর সক্ষমতা প্রকল্প) সম্পন্ন করেছে প্রায় ৬০০ কোটি ব্যয় করে। এর অধীনে যে পরিমাণ পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা হয়েছে, রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে এবং সাজেশন দেয়া হয়েছে – তার সবগুলো বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহর ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলায় অনেক এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই প্রজেক্টের অধীনে একটা সাবপ্রজেক্ট ছিল রাজধানীর ভবনগুলোর নিরাপত্তা যাচাই করা। তাতে দেখা গেছে অধিকাংশ ভবন ডিজাইন এবং নির্মাণ ত্রুটির কারণে ভূমিকম্পসহণীয় নয়।

আমি যখন ব্যক্তিগত এবং প্রফেশনাল কাজে বিভিন্ন জেলায় সাইট ভিজিটে যাই, তখন রাস্তার দুপাশে নির্মাণাধীন ভবনগুলোর কলাম, বিম এবং স্ল্যাবগুলো লক্ষ করি। প্রচুর ভবন ফ্ল্যাট স্ল্যাব এবং কলাম দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের ভবন ডিজাইনে শিয়ার ওয়াল ব্যবহার করে, কলামের সাইজ বাড়িয়ে এবং স্ল্যাবের পুরুত্ব বাড়িয়ে ডিজাইন করতে হয়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। অনেক ভবন দেখি যেগুলোতে চিকন চিকন কলাম এবং বিম দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এই ভবনগুলো হয় অনভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার অথবা মিস্ত্রি দিয়ে মালিকের নির্দেশনায় তৈরি হচ্ছে। এসব ভবনের ফাউন্ডেশনের অবস্থা বলাই বাহুল্য। মিরপুরে একটা বিশাল ১৪ তলা ভবনের এক পাশে ১২ ইঞ্চি বসে গেছে কিছুদিন আগে। এসব ভবন ভূমিকম্পের সময় মুহূর্তের মধ্যেই ধসে পড়বে সেটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

আমি ব্যক্তিগতভাবে ডিজাইন চেকিং করতে গিয়ে দেখেছি,

১. অনেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ডিজাইনে পারদর্শী নয়, বিল্ডিং কোড সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে না।

২. অধিকাংশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশের গভীর নরম মাটিতে ভূমিকম্পসহনীয় ফাউন্ডেশন ডিজাইন সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা রাখেন না। যেমন, উত্তরা ৩য় প্রকল্প, বসুন্ধরা, জলসিড়ির গভীর নরম মাটিতে চিকন লম্বা পাইলের উপর ১০ তলা ভবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

৩. অধিকাংশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার লিকুইফ্যাকশন উপযোগী নরম বালি মাটিতে ফাউন্ডেশন ডিজাইনের প্রশিক্ষণ পায়নি। নরম বালি মাটি যা ভূমিকম্পের সময় লিকুইফ্যাকশন হয়ে তরল পদার্থের মতো হয়ে যায়। এ রকম মাটিতে বিল্ডিং ডিজাইন সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়।

৪. অধিকাংশ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার এবং নির্মাণশ্রমিকরা ভূমিকম্পসহনীয় রড সাজানোর নিয়ম কানুন জানেন না।

৫. আর্কিটেক্টরা মেজানাইন এবং ডাবল-ট্রিপল উচ্চতার পিলার পছন্দ করেন। মালিকরা পছন্দ করেন, কারণ, দেখতে ভালো লাগে। এক্ষেত্রে ডিজাইনে অতি সতর্কতার সঙ্গে করা না হলে, ভূমিকম্প ঝুঁকি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

৬. প্রিকাস্ট পাইলগুলো লিকুইফ্যাকশন উপযোগী মাটি ভেদ করে হার্ড লেয়ারে ঢোকানো সম্ভব হয় না, এক্ষেত্রে ভূমিকম্পের সময় এসব ভবন ফাউন্ডেশনের দুর্বলতার কারণে ধসে পড়বে।

৭. কাস্ট ইন সিটু পাইলগুলো নির্মাণ ত্রুটির কারণে পাইলের তলার মাটি নরম থেকে যায়। ফলে, ভূমিকম্পের সময় অধিক লোড আসার কারণে ভবন কাত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৮. জেলা শহর এবং গ্রামে-গঞ্জে অভিজ্ঞ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারের অভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডিজাইন ছাড়া অথবা অনভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে ডিজাইন করা হয়।

বাংলাদেশের বেশির অঞ্চলের মাটি হয় নরম কাদা অথবা লিকুইফ্যাকশনপ্রবণ নরম বালি। এসব মাটিতে ফাউন্ডেশন এবং স্ট্রাকচার ডিজাইনে বিল্ডিং কোড মানার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা অথবা এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দরকার। ঢাকা শহরে অনেক হাউজিং প্রজেক্ট আছে যেগুলোতে নরম কাদার ওপর ড্রেজিং করে বালি ভরাট করার মাধ্যমে ডেভেলপ করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে নরম কাদার কারণে ভূমিকম্পের মাত্রা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় আবার লিকুইফ্যাকশনপ্রবণ নরম বালির কারণে মাটির ভারবহন ক্ষমতা থাকে না।

সব মিলিয়ে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ৭-এর অধিক মাত্রার ভূমিকম্প বাংলাদেশে হলে, যে ক্ষয়ক্ষতিগুলো হতে পারে তা হলো:

১. বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা এবং রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এগুলো নরম কাদা অথবা নরম বালির ওপর তৈরি করা। অনেক ক্ষেত্রে, ঠিকমতো কম্প্যাকশন করা হয়নি।

২. অনেক ব্রিজ ভেঙে পড়বে অথবা ব্রিজের অ্যাপ্রোচ ধসের কারণে ব্রিজ ব্যবহার করা যাবে না মেরামত না করা পর্যন্ত।

৩. গ্যাসলাইন, পানির লাইন লিক করতে পারে।

৪. বেশিরভাগ ভবন হয় ভেঙে পড়বে অথবা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাবে।

৫. শহরগুলোতে যেখানে রাস্তা সরু, সেখানে উদ্ধার তৎপরতা অত্যন্ত কঠিন হবে।

ভূমিকম্প মোকাবিলায় আমাদের করণীয় :

ভূমিকম্পের কোনো আগাম সতর্কতা জারি করা যায় না। আমরা জানি না কোন মুহূর্তে ভূমিকম্প হবে। আমরা শুধু বলতে পারি ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। ভূমিকম্প প্রতিহত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা করতে পারি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠিকে থাকবে এরকম ভূমিকম্পসহনীয় স্থাপনা। স্থাপনার ধরন অনুযায়ী সেই মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যেমন, পাওয়ার প্লান্ট যেই মাত্রার জন্য ডিজাইন করা হয়, আবাসিক ভবন সেই মাত্রার জন্য করা হয় না। কেউ চাইলে করতে পারে, কিন্তু অনেক ব্যয়বহুল হবে বিধায় কেউ করে না। আমরা চাই, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল যেন ভূমিকম্পের সময় কোনো মতেই ধসে না পড়ে। আমাদের ভবনগুলোতে রড এমনভাবে সাজাতে হয় যাতে, বড় ভূমিকম্পে ভবন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোনোমতেই ধসে না পড়ে। তাতে জীবন রক্ষা পাবে, পরবর্তীতে সামান্য মেরামতের মাধ্যমে ভবন আবার ব্যবহারযোগ্য হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ভূমিকম্প মানুষ মারে না, মানুষ মরে তাদের নির্মিত ত্রুটিযুক্ত ভবনের নিচে চাপা পড়ে। তাই, আমাদের উচিত ব্যক্তিগতভাবে এবং সামগ্রিকভাবে সচেতন হওয়া।

ভূমিকম্পসহনীয় স্থাপনা এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যা করা উচিত :

১. ডিজাইন অনুমোদন : গ্রাম থেকে শহরে যেখানেই বিল্ডিং করা হোক, বিল্ডিং কোড (Bangladesh National Building Code 2020) মেনে ডিজাইন করতে হবে। এটা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক সংস্কার এবং দক্ষ জনবল প্রয়োজন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন বা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষগুলোতে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার এবং আর্কিটেক্ট নিয়োগ দিয়ে তাদের মাধ্যমে এটা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ, যারা বিল্ডিং এর ডিজাইন অনুমোদন দেবেন, তাদের অবশ্যই দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হতে হবে। মনে হতে পারে এতে সরকারে ব্যয় বেড়ে যাবে। আসলে সরকারের ব্যয় বাড়বে না, বরং রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে। কারণ, অনুমোদনের জন্য এমন ফি নির্ধারিত করতে হবে যা থেকে কর্তৃপক্ষের জনবলের বেতন দেয়া যাবে। তবে, সরকার নির্ধারিত ফি এর বাইরে যাতে আর কোন অতিরিক্ত উৎকোচ দেওয়া না লাগে সেটা করতে পারলে, একটা বিশাল অর্জন হবে। পাশাপাশি বড় শহরগুলোতে ভবনের ডিজাইন ড্রয়িং একটি নিবন্ধিত ডিজাইন ফার্ম দিয়ে করতে হবে এবং আরেকটি নিবন্ধিত ফার্ম দিয়ে চেক করতে হবে। এ রকম অনেক ফার্ম নিবন্ধিত করতে হবে তাদের অভিজ্ঞতা, যোগ্যতার ভিত্তিতে।

২. পুরোনো ভবনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভবন মালিকদের নোটিশ দিতে হবে, হয় ভেঙে ফেলুন না হয় ভবনের শক্তি বৃদ্ধি করুন। সরকারিভবনগুলো সবার আগে এর আওতায় আনা উচিত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ফায়ার ব্রিগেড, পাওয়ার প্লান্ট, সরকারি সব গুরুত্বপূর্ণ অফিস ইত্যাদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিরাপদ কি না যাচাই করে হয় ভেঙে নতুন ভবন করা অথবা পুরোনো ভবনের শক্তিবৃদ্ধি করতে হবে। প্রথমে ২০ বছরের অধিক পুরনোগুলো এর আওতায় এনে তারপর ১০-২০ বছর পুরোনো এবং সবশেষে ১-১০ বছর পুরোনো ভবনগুলো এর আওতায় আনতে হবে।

৩. শহরগুলোতে আগামী ৫০ বছরের উন্নয়ন, শহরবর্ধন মাথায় রেখে জমিগুলো কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে, রাস্তা এবং প্লটিং করে জমির মালিকদের বরাদ্দ দিতে হবে তাদের জমির আনুপাতিক হারে। এটা একটা বিশাল কাজ। এর জন্য প্রয়োজন অনেক চিন্তাভাবনা, গবেষণা। অন্যথায় সরু রাস্তার দুইপাশে বিশাল অট্টালিকা নির্মাণ বন্ধ করা সম্ভব হবে না। ঢাকাসহ সব শহরগুলোতে এটা লক্ষণীয়।

৪. আর্কিটেক্ট, প্ল্যানার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের প্রফেশনাল বডি (IAB, IEB etc.) অথবা স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে ডিজাইন এবং কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে সরকারের একটা বাজেট থাকতে পারে অথবা যারা প্রশিক্ষণ নিবেন তাদের কাছ থেকে ফি নিয়ে কম বাজেটে সম্পন্ন করা সম্ভব।

৫. প্রতিবছর পরীক্ষার মাধ্যমে প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ার নিবন্ধনের ব্যবস্থা করলে এবং সেই নিবন্ধিত ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া কেউ ডিজাইন করতে পারবে না – এ রকম নিয়ম কঠোরভাবে পালন করলে, ডিজাইনে ত্রুটি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। নিবন্ধিত ইঞ্জিনিয়ারদের কাছ থেকে সরকার প্রতিটি ভবনের ডিজাইনের জন্য প্রতি বর্গফুটে একটা নির্দিষ্ট হারে ট্যাক্স এবং ভ্যাট নিতে পারে। এই রাজস্ব আয় থেকে ফ্রেশ ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

৬. নির্মাণশ্রমিকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বেকারত্ব কমানোর ব্যবস্থা নিলে দুদিকেই লাভ। টেকসই উন্নয়ন এবং বেকারত্ব হ্রাস।

৭. বড় শহরগুলোতে প্লানিং এর ক্ষেত্রে মাটির অবস্থা এবং সাইজমিক মাইক্রোজোনেশন বিবেচনায় নিলে ভূমিকম্প ঝুঁকি কমবে।

উপসংহার

ভূমিকম্প মানুষ মারে না, আমরা মরি আমাদের নির্মিত ভবনের নিচে চাপা পড়ে। শুধু বিল্ডিং কোড (Bangladesh National Building Code 2020) মেনে চললেই ৬০% সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। তাই, নীতিনির্ধারকদের এবং আমাদের উচিত সচেতন হওয়া এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

লেখক - প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট।

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অল্পতেই পার পেলেন রুডিগার!

রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় ৮ মে 

চলন্ত ট্রেনের দরজার বাইরে মাথা বের করার চরম পরিণতি

কাশ্মীরের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বললেন কারাবন্দি ইমরান খান

ব্রাজিলের কোচ হওয়া হচ্ছে না আনচেলত্তির

ধানের ট্রাকে চাঁদাবাজি, বিএনপি-যুবদলের ৩ নেতা আটক

হাজিদের সুবিধা দেওয়ার নামে প্রতারণা, সতর্ক করল মক্কা পুলিশ

পলিথিনে মোড়ানো অ্যাম্বুলেন্স রিকশাভ্যানই রোগীদের ভরসা

দোকানের বারান্দায় পড়ে ছিল যুবকের মরদেহ

বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের সাজা বাতিল

১০

রোমে বৈশাখী উৎসব উদযাপন বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের

১১

আরও একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান সেনাবাহিনী

১২

ছুটির ৩ দিনে ঢাকায় টানা সমাবেশ

১৩

ফেনীতে ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল বৃদ্ধের

১৪

পাকিস্তানে হামলার শঙ্কা, দুই দেশের নেতাদের ফোন করলেন জাতিসংঘ মহাসচিব

১৫

কুতুবদিয়ায় কাফনের কাপড় পরে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি

১৬

আবারও ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি, তীব্র উত্তেজনা

১৭

মাটি কাটার দায়ে ৮ জনের কারাদণ্ড

১৮

ঢাকায় আজও বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস

১৯

কলকাতার হোটেল ভয়াবহ আগুন, নিহত ১৪

২০
X