শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
প্রফেসর ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান খান
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ০৬:২২ পিএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কোরবানির অর্থনীতি ও ব্যবস্থাপনা

হাটে কোরবানির পশু। ছবি : সংগৃহীত
হাটে কোরবানির পশু। ছবি : সংগৃহীত

ঈদুল আজহা বা কোরবানি ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ধর্মীয় ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, মানব সৃষ্টির আদিকাল থেকেই বিভিন্ন নবী ও রাসুলের যুগে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে কোরবানির প্রথা প্রচলিত ছিল। ইসলামে কোরবানির সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা হলো হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর ত্যাগের মহাপরীক্ষা। এই ঘটনার স্মরণে সামর্থ্যবান মুসলমানরা প্রতি বছর ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করে থাকেন। সময়ের পরিক্রমায় মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কোরবানির পশুর সংখ্যাও ক্রমাগত বেড়েছে, যার ফলে কোরবানিকে ঘিরে একটি বিশাল অর্থনীতির সূচনা হয়েছে। এই অর্থনীতির সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে ধর্মীয় ত্যাগের আদর্শ রক্ষা করার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও কোরবানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে কোরবানি প্রদানকারীর সংখ্যাও ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে। এর ফলে প্রতি বছর কোরবানির পশুর চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও কোরবানিকৃত পশুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে, তবে বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৭ সাল থেকে দেশে প্রতি বছর ১ কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়ে আসছে। ২০২৪ সালে কোরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখেরও বেশি, যার মধ্যে গরু ও মহিষ ছিল প্রায় ৪৫ লাখ, ছাগল ও ভেড়া ছিল প্রায় ৫৭ লাখ এবং উটসহ অন্যান্য পশুর সংখ্যা ছিল তুলনামূলকভাবে অল্প। তবে কোভিড-১৯ মহামারির সময় (২০২০-২১) কোরবানির পশুর সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পায়—২০২০ সালে প্রায় ৯৪ লাখ এবং ২০২১ সালে প্রায় ৯০ লাখ পশু কোরবানি হয়। এরপর থেকে পশু কোরবানির সংখ্যা আবারও বাড়তে থাকে। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে অতিরিক্ত ৩.৬৭ লাখ পশু কোরবানি হয়েছে। এই প্রবণতা নির্দেশ করে যে কোরবানির পশুর চাহিদা ও সরবরাহ উভয়ই সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে, যদিও বৈশ্বিক মহামারির মতো সংকটে তা সাময়িকভাবে হ্রাস পেয়েছিল।

২০১৫ সালের আগে বাংলাদেশ কোরবানির পশুর জন্য ভারতে উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু ওই বছর বিজেপি সরকার গরু রপ্তানি বন্ধ করলে তাৎক্ষণিকভাবে দেশের বাজারে প্রভাব পড়ে। গরুর সরবরাহ কমে যাওয়ায় মাংসের দাম দ্রুত বেড়ে যায়—প্রতি কেজি ২৭৫-৩০০ টাকা থেকে ৪০০-৪২৫ টাকা হয়, পরবর্তীতে তা বেড়ে ৮৫০-৯০০ টাকা ছাড়ায়। এতে সাধারণ মানুষের জন্য মাংস অপ্রাপ্য হয়ে পড়ে এবং প্রাণীজ পুষ্টির ভোগ কমে যায়। তবে এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। দেশীয় গবাদিপশু উৎপাদনে গুরুত্ব বাড়ে এবং সরকার ও খামারিরা উৎপাদন বৃদ্ধিতে নানা উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে দেশে বছরে ৪৫-৫০ লাখ গরু ও ৫৫-৬০ লাখ ছাগল উৎপাদিত হয়, যা কোরবানির চাহিদা প্রায় সম্পূর্ণ পূরণ করে। আমদানিনির্ভরতা কমে স্থানীয় খামারিরা লাভবান হচ্ছেন, এবং কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনীতি দেশের ভেতরে প্রবাহিত হচ্ছে।

কোরবানি কেবল পশু জবাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক চক্রের সূচনা করে। কোরবানির সময় পশু ব্যবসা, চামড়াশিল্প, পরিবহন, মসলা, ফ্রিজ, রেমিট্যান্স, শ্রমবাজার এবং খাদ্য সরবরাহসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়, যা বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে। এই সময়ে প্রবাসী আয়ও দেশে বেড়ে যায়, যা অভ্যন্তরীণ বাজারে নগদ প্রবাহ বৃদ্ধি করে। কোরবানির গরুর উৎপাদন মূলত গ্রামকেন্দ্রিক হওয়ায় এটি গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে কোরবানির ঈদকে ঘিরে গড়ে ওঠা অর্থনীতির পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ ছোট-বড় পশু খামার রয়েছে, যার মধ্যে ১২ লাখই প্রান্তিক কৃষকের। এই খাতে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষ যুক্ত, যা গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য এক বিশাল সম্ভাবনার দিক। এ বছরের মার্চ মাসে আমি আমার গবেষণার কাজে শেরপুর জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে একটি বিস্ময়কর দৃশ্য আমার নজরে আসে—প্রায় প্রতিটি দরিদ্র পরিবার কোরবানির উদ্দেশ্যে কমপক্ষে একটি করে গরু পালন করছে। আমি কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বলি এবং জানতে পারি, তারা গরুগুলো ৪ থেকে ৫ মাস আগে কিনেছে এবং বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পালন করছে। তাদের চোখেমুখে ছিল আশা, ঈদের সময় গরুগুলো বিক্রি করে কিছু লাভ হবে এবং সংসারের অতিরিক্ত খরচ মেটানো যাবে। কিন্তু খোলামেলা আলোচনায় উঠে আসে একটি বড় সংকট—গরুর খাদ্য, ওষুধ, খড় এবং খামার যন্ত্রপাতির মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। ফলে তারা দ্বিধায় ভুগছে—লাভ হবে না ক্ষতি, তা কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না। এই অনিশ্চয়তা তাদের আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলছে, যদিও তারা পরিশ্রমে কোনো ঘাটতি রাখেনি। এইসব প্রান্তিক কৃষকরা বছরে কয়েকটি গরু বা ছাগল লালন-পালন করে কোরবানির সময়ে বিক্রি করেন, যা তাদের জন্য একটি স্থায়ী আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গরু ও ছাগলের হাট এবং ইজারা ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। ২০২৪ সালে দেশজুড়ে প্রায় ৪,৪০৭টি পশুর হাট স্থাপিত হয়েছিল। গ্রাম ও শহরের হাট ব্যবস্থার মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। শহরে সিটি কর্পোরেশনসমূহ অস্থায়ী ও স্থায়ী কোরবানির হাট ইজারা দিয়ে পরিচালনা করে। ২০২৪ সালে ঢাকায় দুই সিটি কর্পোরেশন—ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ—মিলিয়ে মোট ২২টি হাট পরিচালনা করেছে, যার মধ্যে ২০টি অস্থায়ী এবং ২টি স্থায়ী হাট অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০২৩ সালে শুধু ঢাকার হাটগুলো থেকে ১০০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়েছিল। অন্যদিকে, গ্রামে হাট ব্যবস্থাপনা সাধারণত ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হয়। হাটগুলো থেকে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন ইজারা ও অন্যান্য ফি বাবদ উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় করে থাকে। এই হাটগুলিকে ঘিরে আরও বেশ কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গড়ে ওঠে, যেমন - পশু পরিবহন, পশু খাদ্য সরবরাহ, ওষুধ, নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোরবানির পশু হাটে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা খুবই প্রশংসনীয়। কোরবানির হাটের ইজারা প্রক্রিয়া সাধারণত নিলামের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, তবে বাস্তবে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বা তাদের ঘনিষ্ঠরা প্রায়শই ইজারা লাভ করে থাকেন, যা স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার প্রশ্ন তোলে। ইজারা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব, রাজনৈতিক প্রভাব, এবং সিন্ডিকেটের আধিপত্যের কারণে অনেক সময় সরকার প্রত্যাশিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে ইজারা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হলে কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে।

শহরের অনেক মানুষ এখন কোরবানির হাটের যাওয়া-আসা ও ক্রয়ের ঝামেলা নিতে পছন্দ করে না। তাই এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অনলাইন কোরবানি হাট। ২০২৩ সালে এসব প্ল্যাটফর্মে প্রায় ৫০,০০০ পশু বিক্রি হয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমাচ্ছে; পশুর ওজন, বয়স ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য সহজেই যাচাই করা যায়, ফলে অসাধু ব্যবসায়ীদের প্রতারণা কমে; মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ড পেমেন্টের মাধ্যমে নিরাপদ লেনদেন সম্ভব এবং ক্রেতার বাড়িতে পশু পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। সরকার যদি ডিজিটাল কর্মসূচির আওতায় অনলাইন কোরবানি হাটের পরিকাঠামো শক্তিশালী করে, তাহলে এটি কোরবানির অর্থনীতিকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করতে পারে।

কোরবানির সময় পশু ব্যবসার পর সবচেয়ে সক্রিয় অর্থনীতি হলো চামড়া শিল্প। প্রতিবছর কোরবানিকৃত পশুর প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করা সম্ভব হয়, যা চামড়া শিল্পের মোট ব্যবহারের প্রায় ৫০ শতাংশ। তবে গুণগত মান নির্ভর করে চামড়া ছাড়ানোর দক্ষতার উপর, যা গ্রামে সাধারণত অদক্ষ কসাইয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চামড়া সংগ্রহে মূল ভূমিকা পালন করে মধ্যস্বত্বভোগী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত দাম থাকলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয় না; রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট কম দামে চামড়া কিনে নেয়। যেমন, প্রতি বর্গফুট মূল্য নির্ধারণ থাকলেও গরুর চামড়া বিক্রি হয় ২০০-৩০০ টাকায়, খাসিরটি ৩০-৫০ টাকায়—যা প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক কম। অথচ তিন দশক আগেও গরুর চামড়া বিক্রি হতো ৬০০-৭০০ টাকায়। সিন্ডিকেটের কারণে একদিকে চামড়ার মান রক্ষা করা যায় না, অন্যদিকে রপ্তানিও বাধাগ্রস্ত হয়। চামড়া শিল্পের টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু ও ন্যায্য ভ্যালু চেইন, যেখানে সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনে স্বচ্ছতা থাকবে। প্রান্তিক উৎপাদকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সরকারি তদারকি জোরদার, সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর পদক্ষেপ এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অংশীদারত্বে যুক্ত করতে হবে।

উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন খাতে বিশাল ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড গড়ে ওঠে, যার মধ্যে অন্যতম হলো মসলা ও আনুষঙ্গিক পণ্যের ব্যবসা। ঈদুল আজহার আগ-পিছনে দেশের মসলা বাজারে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়; এ সময় আদা, রসুন, পেঁয়াজ, দারচিনি, এলাচ, লবঙ্গ ও গোলমরিচের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। একইসঙ্গে ফ্রিজ, কসাইয়ের ছুরি, দা, চাপাতি ও প্লাস্টিক সামগ্রীর বিক্রিও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়; কোরবানিকেন্দ্রিক সময়ে ফ্রিজ বিক্রির প্রায় ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়। পশু পরিবহন, মানুষের যাতায়াত এবং কোরবানির সামগ্রীর সরবরাহসহ পরিবহন খাতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত লেনদেন হয়। এ সময় হাজার হাজার অস্থায়ী কসাই, শ্রমিক, পশুর রাখাল ও বাজার সহকারীরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পান, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমেয়াদি আয় নিশ্চিত করে। সামগ্রিকভাবে কোরবানির এই সময়ে দেশে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়, যা অভ্যন্তরীণ ভোক্তা অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং সঠিক ব্যবস্থাপনা মাধ্যমে এটি বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে। কোরবানিকেন্দ্রিক গবাদিপশু পালন, পশু বিক্রি, চামড়া শিল্প, পরিবহন, খামারজাত পণ্য, আনুষঙ্গিক সামগ্রী, কর্মসংস্থান ইত্যাদি খাতে একটি সুবিন্যস্ত ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন একটি কোরবানি অর্থনীতি নীতিমালা, যেখানে খামারিদের আর্থিক সহায়তা, পশু খাদ্য ও ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, চামড়া সংগ্রহে স্বচ্ছতা নিশ্চিত, হাট ও চামড়ার সিন্ডিকেট ভাঙা, আধুনিক পশুবাজার স্থাপন, এবং প্রশিক্ষিত কসাই ও চামড়া প্রক্রিয়াকরণে দক্ষ জনবল তৈরি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অনলাইন প্লাটফর্মের উৎসাহ প্রধানের পাশাপাশি, কোরবানির সময় ‘কোরবানি হাব’ গড়ে তুলে স্থানীয় উৎপাদক ও ভোক্তাদের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা যেতে পারে, যা মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমিয়ে উৎপাদকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করবে। এই উৎসবকে পরিকল্পিতভাবে রূপান্তর করা গেলে এটি গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও একটি টেকসই উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।

লেখা : প্রফেসর ড. মো. আক্তারুজ্জামান খান কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

[ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]
কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার দ্বারপ্রান্তে যে সাত দেশ

উত্তরা এলাকা থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করল সেনাবাহিনী

ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদ কেন মাস্কের?

প্রতিক্রিয়ায় খেলাফত মজলিস / জনগণের প্রত্যাশা পূরণে বিশ্বাসযোগ্য উদ্যোগ নিশ্চিত করুন 

সারাদেশে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর

নাইটহুড পাচ্ছেন ডেভিড বেকহ্যাম

রেমিট্যান্সে ট্রাম্পের কর প্রস্তাব, প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কার শঙ্কায় বাংলাদেশ-ভারত

এই কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না : নাহিদ 

শাহ্‌ সিমেন্টের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন হামজা

১৩২ হলে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’

১০

লোহার ফাঁকের ঈদ আনন্দ, কেরানীগঞ্জ কারাগারে মানবিক ছোঁয়া

১১

সালাহউদ্দিন আহমদকে নিয়ে অপপ্রচার, প্রতিবাদে রামুতে বিক্ষোভ

১২

নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করলেন তারেক রহমান

১৩

প্রতিক্রিয়া / সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চায় এবি পার্টি 

১৪

এশিয়া থেকে বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত তিন দেশের

১৫

ঈদের নামাজের রাকাত ছুটে গেলে কী করবেন

১৬

কোরবানি জন্য যত টাকা দিয়ে খাসি কিনলেন উপদেষ্টা আসিফ

১৭

ভারত ইংল্যান্ডে হোয়াইটওয়াশ হলে টেস্টে ফিরবেন কোহলি!

১৮

প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে আর্থিক খাতের দায় 

১৯

নির্বাচনের সময় নিয়ে জামায়াতে আমির যা বললেন 

২০
X