বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও ঘন ঘন মতবিনিময় করা। তাহলে হয়তো উদ্ভট সমস্যাগুলো তৈরি হতো না।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সঙ্গে বৈঠক শেষ এ কথা বলেন তিনি। জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের সভাপতি মৃগেন হাগিদেমের নেতৃত্বে ২০ সদস্য প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নেয়।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যের কোনো অভাব নেই এবং ঐক্য অটুট রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথার ছড়াছড়ি, কখনো পক্ষে-বিপক্ষে বকাবকি এগুলো থাকবে। এটাই রাজনীতি। রাজনীতি মানেই হচ্ছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা, কথা দিয়ে ঘায়েল করার চেষ্টা করা এবং নিজেরটাকে এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করা। সেটা নিয়ে আমরা খুব বেশি চিন্তিত না। রাজনীতির নিয়মটাই তাই। রাজনীতির এমন ধারাটাই চাই। এটা থাকলেই রাজনীতি এগুবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতি থাকলেই দেশের জন্য মঙ্গল। এই কথাবার্তার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র শানিত হচ্ছে। শতফুল ফুটতে দিতে হবে। গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে সকলকে কথা বলতে দিতে হবে। প্রত্যেকের কথা শুনতে হবে। শতফুল ফুটবে তার মধ্য থেকে সবচেয়ে ভালো সৌরভ সুবাস হয়ে আসবে।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার আলোকে আমরা বাংলাদেশে একটা রেইনবো স্টেট নির্মাণ করবার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। সেই কমিটমেন্টে সকল ধর্ম জাতি গোষ্ঠী ক্ষুদ্র গোষ্ঠী সবাইকে নিয়ে একটা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করব।
গতকাল রাতে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোনো ক্রাইসিস তৈরি হলেই সরকার আমাদের ডাকেন। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাই যাই। গণতন্ত্রের উত্তোলনের জন্য যা কিছুই করা দরকার সেই কাজগুলো করব। তবে মনে করি, মতবিনিময় আরো ঘন ঘন হলে ভালো হতো। তাহলে হয়তো উদ্ভট সমস্যাগুলো তৈরি হতো না। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। তাদের সঙ্গে তিনি (ইউনূস) মতবিনিময় করার জন্য ডেকেছিলেন এবং আমরা সেখানে আলোচনা করেছি।
তিনি আরও বলেন, জুলাই এবং আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করা হয়েছে। এই জুলাই আগস্ট মাসেই ওই (ফ্যাসিস্ট) শক্তির আবার উত্থানের একটা নমুনা দেখার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার কথা বলেছি এবং একইসঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করা ত্বরান্বিত করা এবং প্রতিশ্রুত ফেব্রুয়ারির মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন দেওয়া সেটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তের বিষয়টি একটি ‘দুর্ঘটনা’।
মির্জা ফখরুল বলেন, গোপালগঞ্জের সহিংসতার ঘটনাটা ডেফিনেটলি রাজনীতি জড়িত। নির্বাচন বানচাল করার একটা চক্রান্ত এর মধ্যে অবশ্যই আছে। সচিবালয়ে ঢুকে পড়া এবং উপদেষ্টা আটকে রাখা বিষয়গুলোতে ফ্যাসিস্টদের লোকজন জড়িত আছে। তারা কিছু কিছু সমস্যা তৈরি করার চেষ্টায় আছে। এটা কখনোই পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত সজাগ-সচেতন আছে। তারা সমস্ত চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দেবে। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের টার্গেট আমি এখনো দেখছি এবং বুঝছি।
এ বৈঠক আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার।
মন্তব্য করুন